মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন এতদিন। এবার একেবারে অ্যাকশন নিয়ে নিলেন। ভারত, চিন সহ একাধিক দেশের উপর চাপিয়ে দিলেন রেসিপ্রক্যাল ট্যারিফ। যার নির্যাস, শুল্কের পাল্টা শুল্ক। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতি ঘিরে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরই প্রতিবেশী দেশ কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। রেহাই দিলেন না ভারত, চিনকেও। ২ এপ্রিল থেকে ভারত থেকেও মোটা টাকা শুল্ক তুলবে আমেরিকা।
দু'বার ভারতের নাম নিয়েছেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় দু'বার ভারতের নাম নিয়েছেন। বলেন, ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এটা একেবারেই ঠিক নয়। ২ এপ্রিল থেকে যে দেশ আমেরিকান আমদানিতে শুল্ক আরোপ করবে, আমরাও তাদের উপর একই শুল্ক আরোপ করব। অন্যান্য দেশ কয়েক দশক ধরে আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করে আসছে। কিন্তু এখন আমাদের পালা ওই দেশগুলির বিরুদ্ধে এই শুল্ক ব্যবহার করার। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যদি আপনি আমেরিকায় আপনার পণ্য তৈরি না করেন, তাহলে আপনাকে শুল্ক দিতে হবে এবং কিছু ক্ষেত্রে ভারী শুল্কও দিতে হবে।
ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশেরও বেশি অটো শুল্ক আরোপ করে
ট্রাম্প আমেরিকার উপর শুল্ক আরোপকারী দেশগুলির তালিকা প্রকাশ করে বলেন, 'গড়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন, ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো এবং কানাডা আমাদের উপর শুল্ক আরোপ করে। আপনি কি তাদের কথা শুনেছেন? এবং অসংখ্য অন্যান্য দেশ আমাদের উপর আমরা তাদের উপর আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করে। এটা খুবই অন্যায্য।' দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের নাম তুলে ট্রাম্প বলেন , ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশেরও বেশি অটো শুল্ক আরোপ করে। আমাদের পণ্যের উপর চিনের গড় শুল্ক আমাদের পণ্যের দ্বিগুণ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গড় শুল্ক চারগুণ বেশি। চারগুণ বেশি শুল্ক... ভেবে দেখুন। এবং আমরা দক্ষিণ কোরিয়াকে সামরিক এবং অন্যান্য অনেক উপায়ে প্রচুর সাহায্য করি।'
রেসিপ্রক্যাল ট্যারিফ বিষয়টি কী?
বাণিজ্যের ভাষায় এর মানে হল, কোনও দেশ যদি আরেক দেশের পণ্যের উপর রফতানিতে শুল্ক চাপায়, পাল্টা ওই দেশের পণ্যেও একই শুল্ক ধার্য করে দেওয়া। অর্থাত্, 'ইটের বদলে পাটকেল।'
যে দেশগুলি আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপরে চড়া হারে শুল্ক ধার্য করে থাকে, তাদের থেকে রফতানিকৃত সামগ্রীর উপরে পালটা চড়া শুল্ক চাপাবে আমেরিকা।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের নির্যাস, যদি একজন ভারতীয় ব্যবসায়ী আমেরিকা থেকে ওয়াশিংটনের আপেল অর্ডার করেন এবং ধরে নেওয়া হয় যে এর দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা। যদি ভারত সরকার প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা শুল্ক আরোপ করে, তাহলে এই আপেলের দাম প্রতি কেজি ২০০ টাকা হয়ে যাবে। এর ফলে ভারতীয় বাজারে আমেরিকান পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আর স্বাভাবিকভাবেই এর ক্রেতা কমে যাবে।