Officials Attending Terrorists’ Funeral: ৭ মে 'অপারেশন সিঁদুর'-এ খতম হয় ১০০-রও বেশি জঙ্গি। সেই সন্ত্রাসবাদীদের জানাজায়(শেষকৃত্য) সশ্রদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের সেনা অফিসার ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ঘটনার ভিডিও, ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। জঙ্গিদের মৃত্যুতে সেনা-পুলিশের শোকজ্ঞাপন নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।
রবিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী ছবিসহ, প্রমাণ দিয়ে সেই পাকিস্তানি সেনাকর্তা ও পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ অফিসারদের নাম প্রকাশ করেছে। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে এঁরাই ওই শেষকৃত্যে অংশ নিয়ে প্রার্থনা করেছিলেন।
সেই তালিকায় রয়েছেন:
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফইয়াজ হুসেইন শাহ, লাহোরের IV কোর কমান্ডার
মেজর জেনারেল রাও ইমরান সারতাজ, লাহোরের ১১তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের কর্তা
ব্রিগেডিয়ার মহম্মদ ফুরকান শাব্বির
ডঃ উসমান আনোয়ার, পঞ্জাব পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল
মালিক সোহেব আহমেদ ভেথ, পঞ্জাব প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলির সদস্য
পাকিস্তান বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে, তারা কোনও রকম সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে না। কিন্তু ভারতের সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশিত ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, পাক সেনাবাহিনীর একাধিক কর্তা সন্ত্রাসবাদীদের শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছেন।
দেখুন সেই ছবি:
মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিনেতা নমাজ পড়লেন, পাশে দাঁড়িয়ে পাক সেনাকর্তা-পুলিশ
উল্লেখ্য, মুরিদকের জঙ্গিঘাঁটিতে জানাজায় নমাজ পড়ছিলেন লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র সন্ত্রাসবাদী হাফিজ আবদুল রউফ। আন্তর্জাতিক স্তরে মোস্ট ওয়ান্টেড কুখ্যাত জঙ্গিনেতা। সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিতে ভারতের হামলায় ৩ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। তাদেরই শেষকৃত্যে নমাজ পড়িয়েছেন এই মুরিদকে। নিহত তিন জঙ্গি—কারি আবদুল মালিক, খালিদ ও মুদাস্সির—নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার (JuD) সদস্য ছিলেন।
এদিকে কুখ্যাত জঙ্গিনেতাকে ঘিরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তান প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। আশেপাশে JuD-এর অন্যান্য সদস্যরা। উল্লেখ্য, JuD-র প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদ।
হাফিজ আবদুল রউফকে মার্কিন ট্রেজারি ‘বিশ্বব্যাপী কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
জঙ্গিদের শেষকৃত্যে শোকজ্ঞাপন পাকিস্তান সেনার
এই শেষকৃত্যের কিছুক্ষণ পরের আরও একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মুরিদকে এলাকায় পাকিস্তানের সেনাকর্মীরা সেদেশের জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন বহন করছে।
ভারত সরকার পাকিস্তানের এই কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান যেন ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়’ সন্ত্রাসবাদীদের শেষকৃত্য করছে- এটি নিঃসন্দেহে এক ভয়ঙ্কর মেসেজ বহন করে।
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিক সম্মেলনে এই ছবি তুলে ধরে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, 'পাকিস্তান দাবি করছে তাদের সাধারণ নাগরিকদের নাকি মৃত্যু হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, কেন সেসব তথাকথিত সাধারণ মানুষদের কফিন জাতীয় পতাকায় মোড়ানো হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হচ্ছে?'
নির্দিষ্টভাবে জঙ্গি ঘাঁটিই টার্গেট করেছিল ভারত
তিনি আরও জানান, এই হামলা সম্পূর্ণভাবে পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রত্যাঘাত ছিল। আর তাতে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিই সবার আগে টার্গেট করা হয়েছিল।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এ যে ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে ভারত হামলা চালায় সেগুলি হল—সাওয়াই নালা, সারজাল, মুরিদকে, কোটলি, কোটলি গুলপুর, মেহমুনা জোয়া, ভিম্বার ও বাহাওয়ালপুর।
এর মধ্যে চারটি ছিল পাকিস্তানে এবং পাঁচটি পাকিস্তান দখলকৃত কাশ্মীরে। বাহাওয়ালপুর ছিল জইশ-ই-মহম্মদের গড় এবং মুরিদকে ছিল লস্কর-ই-তইবার সদর দফতর।