থাইল্যান্ডের পর এবার কম্বোডিয়াতে যাত্রা করা নিয়ে বিশেষ অ্যাডভাইজরি জারি করল ভারতীয় দূতাবাস। শনিবার জারি করা এই অ্যাডভাইজরিতে কম্বোডিয়ার সীমান্ত এলাকায় এই মুহূর্তে যাত্রা না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে উত্তাল কম্বোডিয়া। চলছে গোলাগুলি, বাড়ছে মৃত্যু। গৃহহীন অসংখ্য মানুষ। এমত অবস্থায় ভারতীয় নাগরিকদের সাবধান করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের ৭টি প্রদেশেও যাত্রা না করার পরামর্শ দিয়ে শুক্রবার ভারতীয়দের জন্য অ্যাডভাইজরি জারি করেছিল দূতাবাস। থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিপত্তি এড়াতেই এই অ্যাডভাইজরি বলে জানানো হয়। থাইল্যান্ডে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া সীমান্তে যে উত্তেজক পরিস্থিতিতে থাই প্রশাসনের আপডেট না দেখে ভারতীয়রা যেন সে দেশে যাত্রা না করেন। থাইল্যান্ডের কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম আগেই জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছে। এরপরই ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এল এই অ্যাডভাইজরি। সে দেশের ২০টি এলাকায় যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে খোদ থাই সরকারই। এই তালিকায় রয়েছে উবন রাতচাথানি, সুরিন, সিসাকেত, বুরিরাম, সা কায়েও, চান্তাবুরি এবং ট্রাট।
থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে বিবাদ বড় আকার ধারণ করছে। সংঘর্ষের জেরে থাইল্যান্ডে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত ৪৫-এর বেশি। থাইল্যান্ডের সরকারের তরফে এই পরিসংখ্যান দেওয়া হলেও তা আরও বেশি বলে বেসরকারি সূত্রে খবর। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছেন। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে রয়েছে এক শিবমন্দির। দাংরেক পর্বতের উপরে অবস্থিত প্রিয়াহ ভিহিয়ার বা প্রিয়া বিহার শিবমন্দির। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমাও পেয়েছে এই মন্দির। থাইল্যান্ড দাবি করে এই মন্দির তাদের। কাম্বোডিয়া তাতেই আপত্তি। গত বুধবার সীমান্তে গোলাগুলি চালায় কম্বোডিয়া। বদলা নিতে বৃহস্পতিবার এফ ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে কম্বোডিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায় থাইল্যান্ড। পাল্টা কম্বোডিয়াও থাইল্যান্ডের ফ্যানম ডং রাক হাসপাতালে হামলা করেছে।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বহু এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। থাই শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে সীমান্তবর্তী এলাকার স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। সীমান্ত লাগোয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে ফিল্ড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ড যেতে ভয় পাচ্ছেন অসংখ্য পর্যটক। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও দেশের পক্ষ থেকেই কোনও ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি জারি করা হয়নি। ব্যাঙ্কক, ফুকেত, চিয়াং মাই, সিয়েম রিপ, পম্পের মতো জনপ্রিয় পর্যটন স্থলগুলি সংঘর্ষ কবলিত এলাকা থেকে বহু দূরে অবস্থিত। ফলে ফ্লাইট, হোটেল পরিষেবা এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সরকারি নির্দেশিকার দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে পর্যটকদের।