
পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞাকে থোরাই কেয়ার। বরং তাদের চোখে চোখ রেখে ইরান, রাশিয়া একটি রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চলেছে। ১৬২ কিমি দীর্ঘ হবে এই রেলপথ। আর এই রেলপথ বিশ্বের বাণিজ্যের রূপরেখা বদল করে দিতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাই নতুন এই রেলপথের দিকে অবশ্যই বাঁকা নজরেই তাকাবে আমেরিকা। এমনকী পশ্চিমের অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলিও একে ভাল চোখে দেখবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাস্ট থেকে অ্যাসট্রা পর্যন্ত এই রেলপথ নিয়ে ইতিমধ্যেই পারদ চড়তে শুরু করেছে। আসলে এটি হল International North South Transport Corridor (INSTC) একটি মিসিং লিঙ্ক। এই নেটওয়ার্ক ৭২০০ কিমি দীর্ঘ। এই পথ একবারে সম্পূর্ণ হয়ে গেলে পণ্য পরিবহণ ৩৭ দিন থেকে ১৯ দিনে নামতে পারে। আর এর মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী সুয়েজ খাল পথের প্রায় অর্ধেক সময়ে পৌঁছে যেতে পারবে পণ্য। শুধু তাই নয়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি Sanctioned দুটি অর্থনীতির জন্য দারুণ খবর।
এটির জন্য খরচ করা হবে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ইউরো। প্রাথমিকভাবে মস্কোই অর্থ জোগাবে। এই প্রকল্পটি রাশিয়ান ইঞ্জিনিয়াররা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষর করে। এটি Comprehensive Strategic Partnership Treaty বা ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তির অংশ হিসাবে সাক্ষরিত করা হয়েছে।
কেন এই করিডর নিয়ে এত হইচই?
নতুন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বিরাট বড় ভূমিকা নিতে চলেছে এই নয়া করিডর। এই করিডর তৈরি হয়ে গেলে বছরে ২০ মিলিয়ন টন পণ্য প্রতিবছর আমদানি ও রপ্তানি হবে। এর মাধ্যমে পৌঁছে যাবে গ্যাস, স্টিল, খাবার এবং যন্ত্রাংশ। আর এই সব মাল পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কোনও পশ্চিমি শক্তির নৌবাহিনীর বাধার মুখেও পড়তে হবে না।
এ দিকে নজর রয়েছে বেজিংয়েরও
মাথায় রাখতে হবে এই করিডরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে চিনও। বেজিং চাইছে দক্ষিণ চিন সাগর থেকে বাল্টিক পর্যন্ত একটি বাণিজ্য নেটওয়ার্ক তৈরি করতে। ব্রিকস এবং সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের মতো প্ল্যাটফর্মের পিছনে দাঁড়িয়ে, এই উদীয়মান ব্লকটি নীরবে কাজ করে চলেছে।
প্রসঙ্গত, বারবার আমেরিকা সহ পশ্চিমি দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া ও ইরান। কিছুদিন আগে ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। আর ও দিকে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তুঙ্গে বিবাদ। একাধিকবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেও কিছুই করে উঠতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে তিনি রেগে লাল। এমন পরিস্থিতিতেই নানা রকম নিষেধাজ্ঞায় ইরান এবং রাশিয়াকে বাঁধতে চেয়েছেন তিনি। আর সেই চোখ রাঙানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নতুন একটা রেল করিডর তৈরি করছে রাশিয়া ও ইরান।