ইরানের এক সরকারি টিভি চ্যানেল ইরান টিভি যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছে। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা যুদ্ধেবিরতি ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর মধ্যস্থতার পর, উভয় দেশেই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে ট্রাম্প দাবি করেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরেও, ইরান ক্রমাগত ইজরায়েলের উপর বোমাবর্ষণ করতে থাকে।
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, ইরান এক ঘণ্টার মধ্যে তিনবার মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এতে ইজরায়েলের ছ'জন সাধারণ নাগরিক মারা গেছেন। ইজরায়েলে হামলার কারণে তেল আভিভে সাইরেন বাজতে থাকে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে, আসলেই কি যুদ্ধবিরতি হয়েছে?
মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ইজরায়েলের সঙ্গে তাদের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে, যদিও ইজরায়েল-ইরান থেকে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পর্দায় একটি গ্রাফিকের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় নির্ধারিত সময়সীমার পরে নতুন মিসাইল হামলার কথা স্বীকার করেনি।
'শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আক্রমণ করবে'
তার আগে পর্যন্ত ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, আমাদের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইজরায়েলকে তাদের আক্রমণের জন্য প্রত্যাঘাত করবে। তিনি বলেন, 'সমস্ত ইরানিদের সঙ্গে একসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যারা তাদের রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত দেশকে রক্ষা করতে প্রস্তুত। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শত্রুর যেকোনও আক্রমণের জবাব দেয়।' কিন্তু যুদ্ধবিরতির শেষ মুহূর্তে আক্রমণ করে ইরান কী প্রমাণ করতে চাইছে, এর ফলে আবারও যুদ্ধ শুরু হতে পারে? এই নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
প্রকৃতপক্ষে, ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে ইরান ব্যাপক ক্ষতির মুখে পডেছে। তাদের তিনটি প্রধান পরমাণু ঘাঁটি ফোর্ডো, নাতানজ এবং ইসফাহানে আমেরিকা বাঙ্কার বাস্টার বোমা দিয়ে আক্রমণ করেছে।
ইজরায়েলি হামলায় ইরানের রেভিলিউশন গার্ডের প্রধান হুসেইন সালামি সহ অন্য শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও, ইরানে প্রায় এক হাজার মানুষ মারা গেছেন। এই যুদ্ধে ইরানের পরিকাঠামোরও অনেক ক্ষতি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইজরায়েল-ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেন। যদিও ইরানের বিদেশমন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, 'এখনও কোনও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনও চুক্তি হয়নি। তবে যদি ইজরায়েলি সরকার প্রথমে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করে, তাহলে তার পরে প্রতিশোধ নেওয়ার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই।'