ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পশ্চিম এশিয়াকে আরেকটি বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এই পুরো যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে একজন ব্যক্তি আছেন যার উপর এখন গোটা বিশ্বের নজর। সেই ব্যক্তি হলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। তবে, এই সবকিছুর মাঝে, সামনে এসেছে খামেনেইয়ের ভারতীয় যোগ। খুব কম লোকই জানেন যে আয়াতোল্লা খামেনেইর পূর্বপুরুষরা মূলত ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাবাঁকি জেলার কিন্টুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
ঐতিহাসিক দলিলপত্র এবং স্থানীয় গল্পকথা অনুসারে , খামেনেইয়ের ঠাকুরদা সৈয়দ আহমেদ মুসাভি হিন্দি ১৭৯০ সালের দিকে কিন্টুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন সম্মানিত শিয়া ইসলামী পণ্ডিত ছিলেন, যিনি স্থানীয়ভাবে 'হিন্দুস্তানি মোল্লা' নামে পরিচিত ছিলেন।
এই যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, সৈয়দ আহমদ ভারত থেকে ইরাকের পবিত্র শহর নাজাফে ভ্রমণ করেন, যা শিয়া মুসলমানদের একটি প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র। সেখান থেকে, তার পরিবার ইরানের খামেনে শহরে চলে আসে, যেখানে তার বংশধররা পরবর্তী বছরগুলিতে ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।
ইসলামী বিপ্লব ইরানের চেহারা বদলে দিয়েছে
সৈয়দ আহমদের বংশধর আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনেই ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের নায়ক হয়ে ওঠেন এবং ইরানকে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন। ১৯৮৯ সালে খামেনইয়ের মৃত্যুর পর, তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন আয়াতোল্লা আলি খামেনেই, যিনি আজও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
মসজিদের কিছু ধ্বংসাবশেষ আজও বিদ্যমান
সৈয়দ আহমেদের পৈতৃক বাড়ি এবং তাঁর নির্মিত মসজিদের কিছু ধ্বংসাবশেষ এখনও বারাবাঁকির কিন্টুর গ্রামে বিদ্যমান। গ্রামের প্রবীণ এবং স্থানীয় ইতিহাসবিদরা এই সম্পর্ককে গর্বের সঙ্গে এখনও স্মরণ করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে ইরানি শাসনের এই ভিত্তি ভারতের মাটি থেকেই শুরু হয়েছিল। তবে,বিষয়টি নিয়ে ঐতিহাসিক মতভেদ রয়েছে। এখন যখন ইজরায়েল এবং ইরান যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি, এবং সমগ্র বিশ্বের চোখ তেহরানের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কৌশলের উপর, তখন ভারতের সঙ্গে খামেনেইয়ের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আবারও শিরোনামে।