নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Prize 2023) পেলেন ইরানের মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মাদি (Narges Mohammadi)। ইরানে মহিলাদের দমিয়ে রাখার বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হল মহম্মাদিকে। মূলত, ইরানে মহিলাদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পুরস্কার পেলেন নার্গিস মহম্মাদি। দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান স্বাধীনতার জন্য তাঁর লড়াই দীর্ঘদিনের।
ইরানে মানবাধিকারের জন্য লড়াইয়ে নার্গিসকে ১৩ বার গ্রেফতার হতে হয়েছে। কিন্তু দমে যাননি। ৩১ বছর ধরে কারাগারে বন্দি নার্গিস। একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ নার্গিসের প্রায় স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গিয়েছে তেহরানের এভিন কারাগার। তাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন।
মানবাধিকারকর্মী শিরিন এবাদির স্বেচ্ছাসবী সংস্থা ডিফেন্ডার্স অফ হিউম্যান রাইটস-এর ডেপুটি হেড নার্গিস মহম্মাদি। শিরিন এবাদিও ২০০৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
১৯৯০-এর দশক থেকে মানবাধিকারের জন্য লড়াই করছেন নার্গিস। পদার্থবিদ্যার কৃতী ছাত্রী। সেই সময় থেকেই ইরানে মহিলাদের সমান অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। জেলবন্দি নার্গিসকে ইতিমধ্যেই শান্তি পুরস্কারের খবর জানিয়েছে নোবেল কমিটি। নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমাজের জন্য কাজ করতে বারবার ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে মূল্য চোকাতে হয়েছে নার্গিসকে। ইরানের নিপীড়িত নারীদের স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন। সকলের মানবাধিকার রক্ষা করতেও প্রাণপন চেষ্টা চালিয়েছেন। সেই সংগ্রামকে সম্মান জানিয়েই নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। নার্গিস ১৯ তম মহিলা হিসাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন।
নার্গিসকে একজন ‘মুক্তির যোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন তার বক্তৃতায় বলেন, ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ শব্দগুলো ইরান সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অন্যতম স্লোগান। নোবেল কমিটি ইরানে নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং সবার জন্য মানবাধিকার ও স্বাধীনতার প্রচারের জন্য লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ নার্গিস মোহাম্মদীকে ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’