
জাপানের উত্তরে ফের কাঁপন ধরাল শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে, ঠিক ১১টা ১৫ মিনিটে, ৭.৬ মাত্রার এক প্রচণ্ড কম্পন আছড়ে পড়ে আওমোরি প্রিফেকচারের উপকূল থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল প্রায় ৫০ কিলোমিটার গভীরে, ফলে উপকূলজুড়ে তাত্ক্ষণিক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সুনামির আশঙ্কায় হাই অ্যালার্ট
কম্পনের কয়েক মিনিটের মধ্যে জাপান মেটিওরোলজিকাল এজেন্সি (JMA) উত্তর-পূর্ব উপকূলের জন্য জারি করে সুনামি সতর্কতা। বিশেষ করে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের দিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা পাঠানো হয়। আবহাওয়াবিদেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ৩ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে। আগেভাগেই উপকূলের মানুষ, পর্যটক সবাইকে দ্রুত উঁচু জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে।
ইতিহাসে বারবার ধাক্কা খাওয়া অঞ্চল
যে সাগরতলের এলাকায় কম্পন হয়েছে, সেই অঞ্চল অতীতেও বহু মারাত্মক সুনামির জন্ম দিয়েছে। JMA জানিয়েছে, আওমোরি অঞ্চলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল সিসমিক ইন্টেনসিটি ৬। এই মাত্রায় দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে ওঠে, আর আসবাবপত্র ভেঙে পড়ার ঝুঁকিও থাকে প্রবল।
রাতভর উদ্ধারকাজ, সর্বোচ্চ সতর্কতায় প্রশাসন
কম্পনের পরই জরুরি পরিষেবা সক্রিয় হয়ে ওঠে। উপকূল ছাড়তে মানুষের অনুরোধে টিভি চ্যানেলগুলোতে চলতে থাকে সতর্কতার বার্তা। কোথাও কোথাও পুলিশ মাইকে ঘোষণা করে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় যেতে বলেছে। উদ্ধার ও ত্রাণকাজ শুরু হয়েছে দ্রুতগতিতে। এখনো পর্যন্ত কোনও নিশ্চিত মৃত্যুর খবর নেই, যদিও ক্ষয়ক্ষতির নজরদারি চলছে।
প্রথম ঢেউ পৌঁছেছে হোক্কাইডো-আওমোরির বন্দরগুলোতে
প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, হোক্কাইডোর উরাকাওয়া বন্দর, এবং আওমোরির মুতসু ওগাওয়ারায় ২০-৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। কিন্তু ৩ মিটার ঢেউয়ের সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে, বলছে JMA। আওমোরির হাচিনোহের একটি হোটেলে আহত হওয়ার খবর মিলেছে। আওমোরি শহরে দুটি জায়গায় আগুন লাগে। ইওয়াতে, মিয়াগি, আওমোরি। সব মিলিয়ে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
একাধিক নিউক্লিয়ার সাইটে সতর্কতা পরীক্ষা চলছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি জানিয়েছেন, মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষাই সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার।