আতঙ্কে কাঁপছে নেপাল
টানা ভারী বৃষ্টিপাত। মাঝে মধ্যে হড়পা বান। আর তাতেই বিপত্তি। বৃষ্টিপাতের জেরে বিভিন্ন জায়গায় মুহুর্মুহু ধস এবং হড়পা বানের আতঙ্কে কাঁপছে নেপাল। এখনও পর্যন্ত বহু মারা গিয়েছে। বহু জখম, বহু গৃহহারা। আবার বাকি যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের কিছু আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। বাকিরা ঘরে বসেই আতঙ্কে দিন গুনছেন।
মৃত একাধিক, ঘরছাড়া বহু
শনিবার নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৫ দিনে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৭ জন শিশু। নিখোঁজ রয়েছে ৩টি শিশু। আহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। ধস প্রবণ এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ত্রাণশিবিরে। হাজারের উপরে মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এখনও পর্যন্ত।
ধসে নিশ্চিহ্ন বাড়ি, সেতু
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ৮০০ বাড়ি ভূমিধসের কবলে পড়ে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ১৯ টি নদীর ওপর সেতু সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষে একা সমস্ত কিছু সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে সেনাবাহিনীকে নেমে সহায়তা করতে হচ্ছে। হাত লাগিয়েছে পুলিশও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের গোর্খা, তানহুন, চিতওয়ান, পাউতান, রাউতাহাট জেলা।
নিখোঁজ শিশু সহ অনেকে
নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হড়পা বান এবং ভূমিধসের জেরে আহত হয়েছেন ৫১ জন। ৩ জন শিশু-সহ ২৪ জনের হদিশ মিলছে না। সিন্ধুপালচক জেলায় পাঁচজন, দোতি জেলায় চারজন, গোর্খা ও রোলপা জেলায় মোট ছ'জন, চিতওয়ান, তানহুন, পাইতান ও রাউতাহাটে দু'জনের মৃৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ললিতপুর, খোটাং, সাপতারি, কাভরে, ধাদিং, সিন্ধুলি, জুমলা, অর্ঘাছি, ড্যাং, পালপা, কাস্কি, কালিকট, পাঁচকার, বাঝাং এবং বাজপুরে একজন করে মারা গিয়েছেন।
জলের নিচে ৮০০ এর বেশি বাড়ি
সেইসঙ্গে প্রায় ৮০০ টি বাড়ি জলের তলায় চলে গিয়েছে। ৫০০ এর বেশি বাড়ি, ৯০ টি গো-শালা এবং ১৯ টি সেতু ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। ২০ দিনে ৫ হাজার এর বেশি মানুষ বাড়িছাড়া হয়ে গিয়েছেন।
সমতলেও প্রভাব
ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজে নেপাল সেনা, পুলিশ এবং সশস্ত্র বাহিনীকে নামানো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে উদ্ধারকাজ। নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে হাজারের উপর উদ্ধার হয়েছে।অনেককে উদ্ধার করা যায়নি। তাদের উদ্ধার কাজে চেষ্টা চলছে। নেপাল লাগোয়া ভারতে সেই প্রবল বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। দার্জিলিং, মিরিক সহ বহু এলাকায়, সমতলে শিলিগুড়িতেও বৃষ্টি চলছে।