
শিলা লবণ বা সন্ধক লবণের (Rock Salt) পুরানো টুকরাকে হ্যালাইট (Halite) বলা হয়। বিজ্ঞানীরা শিলা লবণের একটি খুব পুরানো টুকরোতে পাওয়া স্থির তরলটির মধ্যে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে সংরক্ষিত জৈব কঠিন পদার্থ আবিষ্কার করেছেন। এ জন্য তারা ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করেছেন।
শিলা লবণের নমুনাটি ৮৩ কোটি বছর পুরানো এবং অস্ট্রেলিয়ার নিওপ্রোটেরোজয়িক ব্রাউন ফর্মেশন (Neoproterozoic Browne Formation) থেকে ১,৪৮০ থেকে ১,৫২০ মিটার গভীরতায় নেওয়া হয়েছিল। জিওলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে , বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে লবণে পাওয়া জিনিসগুলি প্রোক্যারিওট (Prokaryotes) এবং শৈবালের (Algae) কোষগুলির (Cells) সঙ্গে মিল খাচ্ছে।
লবণাক্ত সমুদ্রের জলের বাষ্পীভবনের ফলে শিলা লবণের স্ফটিক তৈরি হয়, তাই কিছু জল এবং অণুজীব তাদের প্রাথমিক তরল অন্তর্ভুক্তিতে আটকে থাকতে পারে। জলের এই ছোট প্রসারিত অংশে, গবেষকরা অণুজীব এবং জৈব যৌগ চিহ্নিত করেছেন।
সবচেয়ে মজার বিষয় হল গবেষকরা এই অণুজীবগুলির এখনও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছেন। হ্যালাইটের নমুনাগুলিতে পাওয়া অণুজীবের পূর্ববর্তী উদাহরণগুলির দিকে তাকিয়ে, দলটি অনুমান করছে যে হ্যালাইটের অভ্যন্তরে জৈব যৌগগুলি যা বাদামী ফর্মেশন গঠন করেছে তা নিষ্ক্রিয়, তবে এখনও জীবিত থাকতে পারে।
গবেষকরা বলছেন যে নমুনাগুলিতে কোনও পচন হয়নি এবং লক্ষ লক্ষ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সেগুলি সহজেই সনাক্ত করা যায়। তারা পূর্ববর্তী গবেষণার দিকেও ইঙ্গিত করেছিলেন যা ১,৫০,০০০ বছরের পুরানো শিলা লবণের ভিতরে জীবন্ত অণুজীব খুঁজে পেয়েছিল। একইভাবে, জীবিত ব্যাকটেরিয়াও পাওয়া গেছে ২৫ কোটি বছরের পুরনো লবণের স্ফটিকগুলিতে।
যদি এটি সত্য হয়, তাহলে তা অন্যান্য গ্রহে প্রাণের সন্ধানেও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে। মঙ্গল গ্রহের উপরিভাগে নোনা জলের বিশাল হ্রদ রয়েছে। ব্রাউন ফরমেশন হ্যালাইটসও আছে। পৃথিবীর হ্যালাইটসওে যদি প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব হয়, তাহলে মঙ্গলেও তা সম্ভব হতে পারে।