বর্তমান সরকার ও রাজতন্ত্র সমর্থকদের মধ্যে হিংসায় তপ্ত নেপাল। দেশের জনগণকে আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে সেই দেশের সরকার। অন্যদিকে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহর সমর্থকরা। এর আগে শুক্রবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র সমর্থকরা পথে নামেন। বিক্ষোভ দেখান। লুটপাট চালানো হয়, অগ্নিসংযোগ করা হয় জায়গায় জায়গায়। ২ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তারপর থেকে উত্তপ্ত সেই দেশ। এখন দফায় দফায় সংঘর্ষ চলার খবর সামনে আসছে।
রবিবার ফের কাঠমান্ডুর রাস্তায় বিক্ষোভ দেখানো হয় জ্ঞানেন্দ্র শাহর রাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক পার্টির তরফে। তাদের অভিযোগ, শুক্রবার বিক্ষোভের পর যাদের গ্রেফতার হয়েছে তাদের বেশিরভাগজনই আন্দোলনে সামিল ছিলেন না। তাদের দাবি, কোনও কারণ ছাড়া কয়েকশো মানুষকে গ্রেফতার করেছে এই সরকার। তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগও দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক পার্টি।
অন্যদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এই উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দায়ি করেছেন জ্ঞানেন্দ্রকে। জানিয়েছেন,জ্ঞানেন্দ্রকে স্বাগত জানাতে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই তিনি প্রতিবাদীদের প্ররোচিত করেছিলেন। যার ফল ভুগতে হচ্ছে গোটা দেশকে।
ওলি জ্ঞানেন্দ্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, 'এসব ঘটনা প্রমাণ করে প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র সংবিধান জারির সময় করা চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন।' ওলির দাবি, প্রাক্তন রাজাকে একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাঁকে একাধিক সুবিধাও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও তিনি আইন মানেননি। হিংসায় প্ররোচণা দিয়েছেন।
আন্দোলনের কাছে মাথা নত করবেন না তিনি, সাফ জানিয়েছেন ওলি। তিনি জানান, সবাইকে সংবিধান মেনে চলতে হবে। শুক্রবারের হিংসায় যে বা যারা তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। সরকার আন্দোলনকারীদের দাবির কছে মাথা নত করবে না। প্রয়োজনে কঠোপ পদক্ষেপ করা হবে। দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এমনটা করা জরুরি বলেও দাবি করেন ওলি। রাজা জ্ঞানেন্দ্রর নিরাপত্তাও কমিয়ে দিয়েছে নেপাল সরকার। শুক্রবারের পর থেকে তাঁকে ১৬ জন নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এর আগে তাঁর নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকতেন ২৫ জন।