শুক্রবার ভোরে নেপালে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প। হিমালয় অঞ্চল জুড়ে কম্পন অনুভূত হয়েছে। বিহারের পাটনা, মুজফ্ফরপুর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, নেপালের সিন্ধুপালচক জেলার ভৈরব কুন্ড এলাকায় রাত ২:৩৫ নাগাদ এই ভূমিকম্প হয়। জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.৬ বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি এই মাত্রা ৫.৫ বলে জানিয়েছে। তবে একাধিক ভূমিকম্প হয়েছে কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পকে শক্তিশালী বলেই ধরা যায়। এই মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলে বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। বিল্ডিং কাঁপতে পারে, ফাটলও দেখা দিতে পারে। তবে শুক্রবারের এই ভূমিকম্পের প্রকৃত প্রভাব এখনও জানা যায়নি। এখনও পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর মেলেনি।
নেপালের এক সিনিয়র আধিকারিক গণেশ নেপালি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, 'ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। আমরা সবাই বাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিকই বলা যায়। এখনও পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা আহত হওয়ার খবর মেলেনি।'
পাটনায় ভূমিকম্পের সময় তোলা বেশ কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিল্ডিং ও সিলিং ফ্যান কাঁপছে। এক এক্স (আগে টুইটার ছিল) ব্যবহারকারী জানান, 'ভূমিকম্পের কম্পন ৩৫ সেকেন্ড ধরে চলেছে।'
পাটনাবাসী নিখিল সিং লিখেছেন, 'পাটনায় শক্তিশালী ভূমিকম্প । সবকিছু কাঁপছিল, তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।'
পাকিস্তানেও কম্পন অনুভূত হয়। শুক্রবার ভোর ৫টা ১৪ মিনিটে প্রবল ভূমিকম্প টের পান সেদেশের বাসিন্দারা। কম্পন শুরু হতেই আতঙ্কে মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৫।
এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারিতেও পাকিস্তানে ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল রাওয়ালপিন্ডি থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।
অন্যদিকে, শুক্রবার সকাল ২টা ৪৮ মিনিটে তিব্বতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.১। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৭০ কিলোমিটার গভীরে। এখানেও কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিব্বতের হিমালয় অঞ্চলে পরপর ছয়টি ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.১। সেই ভূমিকম্পে ১২৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ভূমিকম্প কেন হয়?
মূলত পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলির নড়াচড়ার ফলে ভূমিকম্প হয়। ভাসমান প্লেটগুলি পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খেলে বা সরে গেলে ভূ-পৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি হয়। একেই আমরা ভূমিকম্প বলি।
রিখটার স্কেল কী?
রিখটার স্কেল ভূমিকম্পের মাত্রা মাপার একটি পদ্ধতি। এই স্কেলে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত মাত্রায় ভূমিকম্পের শক্তি পরিমাপ করা হয়। সংখ্যা যত বেশি হয়, কম্পন তত শক্তিশালী হয়। ৫-এর নিচে মৃদু, ৬-৭ মাঝারি, আর ৭-এর ওপরে শক্তিশালী ও ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হয়।