নেপালের পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। ইস্তফা দিলেন সেই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির কাছে ইতিমধ্যেই ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। তরুণদের আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম প্রায় ২৫০। এতজনের প্রাণ খোয়ানোর নৈতিক দায়িত্ব তাঁর উপরে বর্তায়, একথা বলে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ান রমেশ।
এদিকে রাত বাড়লেও আন্দোলনের ঝাঁঝ কমেনি। এখনও নেপালের রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে। এতজন আন্দোলনকারীর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই আরও হিংস্র হয়ে উঠেছেন প্রতিবাদীরা। পুলিশ ও সেনার সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধছে তাঁদের। বিদ্রোহ দমনে সন্ধেবেলা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী ওলি। সেখানে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি নমনীয় হবেন না, এই বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। বরং আন্দোলনকে গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ বলে চিহ্নিত করেছেন। সূত্রের দাবি, কোথায় কোথায় হিংসা হচ্ছে, এর নেপথ্যে কে বা কারা, এই সব নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করে ওলি সরকারের উপর চাপ কমানোর চেষ্টা করছেন। নেপালের সংসদের স্পিকার শের বাহাদুর দেউবা জানিয়েছেন, লেখকের বিবেচনাকে মর্যাদা দিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
সকাল থেকে দফায় দফায় আন্দোলন হচ্ছিল জেন Z এর। তারা পৃথক পৃথকভাবে সেই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। তবে দুপুরের পর থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও যুবক, যুবতীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের তরফেও প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের দাবি তোলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বাধীন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কবীন্দ্র বুরলাকোটি আন্দোলনে এত জনের প্রাণহানির জন্য সরকারকে দোষারোপ করেছেন। নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে ওলির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। জানিয়েছেন ওই নেতা। তিনি বলেন, 'নেপালের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেজন্য তাদের সরে দাঁড়ানো দরকার। ফের নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। তবেই দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।'
নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সরকার আগামী তিন দিন অর্থাৎ ৯, ১০ এবং ১১ সেপ্টেম্বর সব স্কুল ও সমস্ত পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কার্ফু জারি করা হয়েছে জায়গায় জায়গায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাঠমাণ্ডুতে বিক্ষোভের আঁচ খানিক কমেছে। রাত্রি বাড়তেই আন্দোলনস্থল ছাড়তে শুরু করেছেন অনেকে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জোরদার প্রতিবাদ শুরু হতে পারে বলে খবর।