Advertisement

গদি টলমল ইমরানের! পাকিস্তানে মেয়াদ পেরোয়নি কোনও প্রধানমন্ত্রীরই

কেউ ১৩ দিন, কেউ ১৮ দিন, কেউ কয়েক মাস। আবার কেউ কয়েক বছর। কিন্তু পুরো পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেনি পাকিস্তানের কোনও প্রধানমন্ত্রীই। নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকে মাঝপথেই থমকে গিয়েছে ইনিংস।

ইমরান খান
সংগ্রাম সিংহরায়
  • নয়াদিল্লি,
  • 04 Apr 2022,
  • अपडेटेड 11:32 AM IST
  • গদি টলমল ইমরানের!
  • পাকিস্তানে মেয়াদ পেরোয়নি কোনও প্রধানমন্ত্রীরই
  • দেখুন পূর্ণাঙ্গ তালিকা

প্রায় অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানে কোনও প্রধানমন্ত্রীকেই পূর্ণ সময় প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার সামলাতে দেওয়া হবে না। সেই প্রথা মেনে ইমরান খানেরও আর প্রধানমন্ত্রী থাকা হল না। বিরোধীদের ডাকা অনাস্থার মুখোমুখি না হয়ে তিনি রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ করেন সংসদে সরকার ভেঙে দিতে। তারপরই রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানের ইমরান খান সরকারকে পদচ্যুত করে। তবে ইমরান খান শুধু নন, পাকিস্তানের আজ পর্যন্ত কোনও প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদ পূর্ণ করেনি।

১৯৪৭ সালে ভারত থেকে ভাগ হয়ে যাওয়ার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান পুরো সময় না থাকলেও ডামাডোলের সরকারকে থিতু করে রেখেছিলেন চার বছরেরও বেশি সময় ধরে। এরপর থেকেই বারবার বদলে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একবার সংবিধানই বাতিল করেন দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইসকান্দার মির্জা।

১৩ বছর পাকিস্তানে কোনও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। ১৯৫৮ সালে দেশে জারি করা হয়েছিল সেনা আইন। সে সময় পাকিস্তানে ছিল চূড়ান্ত ডামাডোল। আসুন দেখে নিই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকা ও মেয়াদের ইতিহাস

১. লিয়াকত আলি খান                                ১৯৪৭-১৯৫১                         (৪ বছর ২ মাস)

২. খোয়াজা নিজামুদ্দিন                              ১৯৫১-১৯৫৩                        (১ বছর ৪ মাস)

৩. মহম্মদ আলি বোগরা                             ১৯৫৩-১৯৫৫                       (২ বছর ৩ মাস)

৪. চৌধুরী মহম্মদ আলি                              ১৯৫১-১৯৫৩                         (১ বছর ৪ মাস)

Advertisement

৫. হুসেন শাহিদ সোহরাবর্দি                        ১৯৫৬-১৯৫৭                        (১ বছর ১ মাস)

৬. ইব্রাহিম ইসমাইল চন্দ্রিগর                         ১৯৫৭                                     (২৮ দিন)

৭. মালিক ফিরোজখান নুন                         ১৯৫৭-১৯৫৮                        (৯ মাস ২৮ মাস) 

৮.নুরুল আমিন                                            ১৯৭১                                       (১৩দিন)

৯. জুলফিকার আলি ভুট্টো                         ১৯৭৩-১৯৭৭                          (৩ বছর ১০ মাস)

১০.মহম্মদ খান জুনেজো                           ১৯৮৫-১৯৮৮                          (৩ বছর ২ মাস)

১১.বেনজির ভুট্টো                                      ১৯৮৮-১৯৯০                          (৩ বছর ১৭ দিন)

১২.নওয়াজ শরিফ                                     ১৯৯০-১৯৯৩                           (২ বছর ৫ মাস)

১৩. জাফারুল্লা খান জামালি                       ২০০২-২০০৪                           (১ বছর ৭ মাস)

১৪. চৌধুরী সাজাত হোসেন                            ২০০৪                                 (১ মাস ২৮ দিন)

১৫.সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানা                   ২০০৮-২০১২                          (৪ বছর ১ মাস)

১৬. রাজা পারভেজ আশরফ                      ২০১২-২০১৩                            (৯ মাস ২ দিন)

১৭. শাহিদ খাকান আব্বাসি                         ২০১৭-২০১৮                               (১০ মাস)

১৮.ইমরান খান                                          ২০১৮-২০২২                           (৩ বছর ৮ মাস)

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান পুরো সময় না থাকলেও ডামাডোলের সরকারকে থিতু করে রেখেছিলেন চার বছরেরও বেশি সময় ধরে। এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। এরপর অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নন, দেশের রাষ্ট্রপতি হন জুলফিকার আলি ভুট্টো। ১৯৭৩ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ১৯৭৭ সালে তিনি নির্বাচনে জেতেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই জেনারেল জিয়াউল হকের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থান হয়।তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। শুধু ক্ষমতাচ্যুতই নয়, তাঁকে একটি খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৯৭৯ সালে সামরিক আদালত তাঁকে ফাঁসির নির্দেশ বহাল করে।

১৯৮৮ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান জেনারেল জিয়াউল হক। এরপরই সেদেশের প্রধানমন্ত্রী হন জুলফিকারের মেয়ে বেনজির ভুট্টো। তাঁর সরকার টিকেছিল ৩ বছর। ১৯৯০ সালে তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন নওয়াজ শরিফ। কিন্তু তাঁকেও পাক সেনার চাপের মুখে ১৯৯৩ সালেই ইস্তফা দিতে হয়।
সেই বছর নির্বাচনে জিতলেও বেনজির ভুট্টোর হেরে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বেনজিরই। ১৯৯৫ সালে একাধিক কারণে সরকারের পড়ে যায়।

এরপর ১৯৯৭ সালে শরিফের মুসলিম লিগ ক্ষমতাসীন হলেও ১৯৯৯ সালে পারভেজ মুশারফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। মুশারফের আমলে তিনজন নামমাত্র প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী ৯ বছর পাকিস্তানের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে নতুন প্রধানমন্ত্রী হন ইউসুফ রাজা গিলানি। ২০১২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা শুরু হলে বাকি সময় প্রধানমন্ত্রী হন রাজা পারভেজ আশরফ। তবে ইউসুফই পাকিস্তানের ইতিহাসে সবথেকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ক্ষমতার মেয়াদ ছিল ৪ বছর ৮৬ দিন।

২০১৩ সালে ফের নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু তিনিও পুরো মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারেননি মামলায় জড়িয়ে। তাঁর মেয়াদ শেষ করেন শাহিদ খাকান আব্বাসি। এরপর ২০১৮ সালে প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইমরান খান নির্বাচনে জিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। শেষমেষ তাঁকেও গদিচ্যুত হতে হল মেয়াদের আগেই।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement