একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল লেবানন। জানা যাচ্ছে, এই বিস্ফোরণে এক হাজারেরও বেশি মানুষ জখম হয়েছেন। আহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছেন। এই ভয়াবহ ঘটনায় ইরানের রাষ্ট্রদূত মোজিৎবা আমানিও আহত হয়েছেন। ইরানের মেহর নিউজ এজেন্সি সূত্রে মিলেছে এই খবর। জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে হঠাৎ বহু মানুষের পেজারের(ছোট আকারের যোগাযোগের ডিভাইস) ব্যাটারি ফাটতে শুরু করে। একসঙ্গে এতগুলো পেজার কীভাবে ফাটল? উঠছে প্রশ্ন। লেবাননের দাবি, ইজরায়েল হ্যাকিং করে পেজারগুলির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
লেবানন জানিয়েছে, এদিন বিকেলের 'হামলা'য় কয়েকশো হিজবুল্লাহ যোদ্ধা গুরুতর জখম হয়েছে। তবে এই বিস্ফোরণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে সেই সংখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি।
এই সিরিয়াল বিস্ফোরণে দক্ষিণ লেবানন এবং রাজধানী বৈরুত সহ বেশ কিছু জায়গায় ধ্বংসস্তুপ তৈরি হয়েছে। এটি হিজবুল্লাহর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইন্টেলিজেন্স ফল্ট হিসাবে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সময় বিকাল ৩টে ৪৫ মিনিটে বিস্ফোরণটি ঘটে বলে জানা গিয়েছে। বলা হচ্ছে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটেছে। ঘণ্টাখানেক জুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি হয়।
বিস্ফোরণ নিয়ে কী বলল হিজবুল্লাহ?
এই বিস্ফোরণে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিও এসেছে। তাতে তারা এর পিছনে ইজরায়েলের জড়িত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, তাতে একটি মেয়ে নিহত হয়েছে বলে খবর মিলেছে। সেখানকার বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০০-১৫০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইরানের রাষ্ট্রদূতও রয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সূত্রে খবর, সম্ভবত পেজারের লিথিয়াম ব্যাটারির কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। অতিরিক্ত তাপের প্রভাবে সেগুলি ফেটে যেতে পারে।
হাসপাতালের ভয়ঙ্কর ছবি
সোশ্যাল মিডিয়া এবং লেবানন ও ইজরায়েলের সংবাদমাধ্যমে শেয়ার করা ছবিতে আহত মানুষদের মেঝেয় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। মেঝে জুড়ে রক্তের ছাপ। অনেকেই অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। বলা হচ্ছে, বিস্ফোরণের পর একধাক্কায় চাপ বেড়ে গিয়েছে হাসপাতালগুলিতে। এক হাসপাতালের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজনের মাথায় গভীর আঘাত রয়েছে। তাঁদের হাতে-পায়েও আঘাতের চিহ্ন।
বিস্ফোরণের পিছিনে কারা?
এখনও পর্যন্ত লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের দায় নেয়নি কেউ। তবে মনে করা হচ্ছে, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ইজরায়েল এই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থাকতে পারে। তবে ইজরায়েল এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আরও বড় বড় অভিযোগ উঠেছে। ইরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহের মৃত্যুই হোক বা লেবাননে হিজবুল্লাহ কমান্ডারের ওপর হামলা, এই সব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে ইজরায়েল।