ভাঁড়ে মা ভবানী দশা পাকিস্তানের। বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে গিয়েই অর্থনীতির শোচনীয় হাল। তার উপর আবার দিন দিন বাড়ছে ডলারের দাম। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল মানিটরি ফান্ডও কিছু শর্ত চাপিয়েছে দেশটির উপর। আর এমন কাঙাল পরিস্থিতিতে ধুকছে পাকিস্তানের গাড়ি শিল্প। পালাচ্ছে বহু গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা। এ সব মাথায় রেখেই আবার নতুন গাড়ির বদলে পুরনো ব্যবহৃত গাড়ি আমদানি করতে চলেছে পাকিস্তান।
ইতিমধ্যেই সেই দেশের ইকোনমিক কোঅর্ডিনেশন কমিটি পুরনো গাড়ি আমদানির বিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছে। আর স্বভাবচিত ঢঙে এই পিছিয়ে পড়া সিদ্ধান্তকেও এক বিরাট পদক্ষেপ বলে চালিয়েছে সে দেশের সরকার।
সরকারের পক্ষে দাবি, এটা গাড়ি শিল্পে জোয়ার আনবে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একবারেই খুশি নয় গাড়ির শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংস্থারা। তাদের মতে, সরকারের এই সিদ্ধান্তে আদতে শিল্পের বুনিয়াদি গঠনেই সমস্যা তৈরি করবে।
এখানেই থেমে না থেকে সেই দেশের অটোমোটিভ ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য হল, সরকারের এমন পিছিয়ে থাকা নীতির জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস হারাচ্ছে। যার ফলে তারা মার্কেট থেকে বেরিয়ে যেতেও পারে।
কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের সরকার?
সেই দেশের অর্থমন্ত্রী ও ইসিসি-এর চেয়ারম্যান মহম্মদ ঔরঙ্গজেব জানিয়েছেন, প্রথম দফায় ৫ বছর বা তার কম বয়সী পুরনো গাড়িই আমদানি করা হবে। এই নিয়ম লাগু থাকবে ৩০ জুন, ২০২৬ পর্যন্ত। এ সব গাড়ির উপর ৪০ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি চাপানো হবে। তবে প্রতিবছর সেই শুল্ক ১০ পয়েন্ট করে কমবে। আর ২০২৯-২০৩০ সালের মধ্যে এই শুল্ক তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি এই সময়ের পর থেকে পুরনো গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে বয়স দেখারও প্রয়োজন পড়বে না।
কী বলছে অটো ইন্ড্রাস্ট্রি?
আরব নিউজের করা একটি খবরে বলা হয়েছে, টোয়োটা, হন্ডা, সুজুকি, হুন্ডাই, কিয়া এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একবারেই খুশি নয়। এই সংস্থাগুলি মনে করে যে এমন সিদ্ধান্তের ফলে তাদের ব্যবসায় মন্দা আসতে পারে। কমবে গাড়ি তৈরি। সেই সঙ্গে গাড়ি বিক্রিও হবে কম।
তাই সে দেশের অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এই ধরনের গাড়িতে আরও ৪০ শতাংশ ট্যাক্স লাগিয়েও লাভ হবে না। এই গাড়িতেই মার্কেটে ভরে যাবে। যার ফলে স্থানীয় গাড়ি তৈরি ব্যাহত হবে।
এর পাশাপাশি পাকিস্তানের অটোমোবাইল পার্টস অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ ম্যানুফ্যাকচারার এই নিয়ে চিন্তিত। তাদের দাবি, এমন সিদ্ধান্তের ফলে স্টিল, প্ল্যাস্টিক, রাবার, কপার ও অ্যালুমোনিয়াম সাপ্লাইয়ের সঙ্গে যুক্ত ১২০০ কোম্পানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।