একটা সময়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অত্যাচারে কাঁপত। ১৯৭১ সালে ভারতের সাহায্যে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীন হয় তারা। তারপর পদ্মা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। যারা একটা সময়ে পাকিস্তানি সেনার অত্যাচারে কাবু ছিলেন, এখন সেই পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে উদ্যত। এটা কেবলমাত্র কূটনৈতিক ষড়যন্ত্রই নয়, বাংলাদেশের পরিকল্পনা ভারতের সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে।
পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সম্প্রতি এমন একটি বোঝাপড়া করেছে যাতে সরাসরি ভারতের সুরক্ষা ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়তে পারে। এই বোঝাপড়ার মাধ্যমে দুই দেশ ডিপ্লোমেটিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টের অধিকারী নাগরিকদের ভিসা ফ্রি এন্ট্রি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ এবার থেকে পাকিস্তানের নাগরিক ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশে যেতে পারবেন। এর ফলে ভারতের সুরক্ষা এজেন্সিগুলি উদ্বিগ্ন।
জানা গিয়েছে ঢাকায় এই সমঝোতা হয় পাকিস্তানের গৃহমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এবং বাংলাদেশের গৃহমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গির আলম চৌধুরীর মধ্যে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং বাংলাদেশের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান মহম্মদ ইউনূস এই সমঝোতাকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন। তবে ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক নয়, বরং বিপজ্জনক। সন্ত্রাসবাদ ছড়াতে পাকিস্তানের ভূমিকা কারও অজানা নয়, ফলে উদ্বিগ্ন ওয়াকিবহাল মহল।
ভিসা ফ্রি ডিলের মাধ্যমে চর পাঠাবে পাকিস্তান?
পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং জম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত থেকে সন্ত্রাসবাদীদের ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়। তবে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর পর থেকে এই জঙ্গিদের গতিবিধির উপর কড়া নজর চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানও জানে এবার কাশ্মীর থেকে অনুপ্রবেশ সহজ হবে না। ফলে তারা বাংলাদেশের সীমান্তকে বেছে নিয়েছে।
নয়া এই ভিসা ফ্রি ডিলের মাধ্যমে পাকিস্তান ISI এজেন্ট এবং প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসবাদীদের ডিপ্লোমেটিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্ট দিয়ে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দিতে পারে। সেখান থেকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে পারে জঙ্গিরা। বাংলাদেশ দিয়ে এন্ট্রি হলে পাকিস্তান নিজের ঘাড় থেকে দোষ ঝেড়েও ফেলতে পারবে।
ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত মোট ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে ১ হাজার ১১৬ কিলোমিটার নদী এবং উপকূল। ৮০০ কিলোমিটার সীমান্তে এখনও কোনও কাঁটাতার নেই। সেটাকেই টার্গেট করতে পারে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের গদি পাল্টানোর পর থেকেই পরিস্থিতিতে বদল এসেছে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে জেলবন্দি বহু কট্টরপন্থী এবং ভারত বিরোধী
জঙ্গি বর্তমানে মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারাই যদি এবার পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসাজশ রাখে তবে ভারতের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র তৈরি হতে পারে।
ভারতকে ৩ দিক থেকে চাপে ফেলার পরিকল্পনা?
চিন প্রথম থেকেই অরুণাচল প্রদেশ এবং আকসাই চিনের দিকে নজর দিয়ে বসে আছে। এর মাঝে মুহাম্মদ ইউনূসের নানারকমের বয়ান ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় পরিকল্পনারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ভারতকে তিন দিন থেকে চাপে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তরে চিন এবং পূর্বে বাংলাদেশের দিক থেকে।