
পাকিস্তান আবারও আফগানিস্তানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এমনই অভিযোগ তুলেছে তালিবান সরকার। মধ্যরাতে আফগানিস্তানের বিভিন্ন জেলায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৯টি শিশু নিহত ও বহু অসামরিক মানুষ আহত হয়েছে। ঘটনাটি দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়েছে, আর তালিবান সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছে ‘উপযুক্ত সময়ে প্রতিশোধ’ নেওয়ার।
মধ্যরাতে হামলা, শিশু নিহত
ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, রাত ১২টার দিকে পাকিস্তানি বিমান খোস্তের গুরবুজ জেলার মুগুলগাই এলাকার একটি বেসামরিক বাড়িতে বোমা ফেলে। এতে পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে, মোট ৯ শিশু নিহত হয়। বাড়িটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এছাড়া কুনার ও পাকতিকা প্রদেশেও হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে আরও চারজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে।
তালিবানের কঠোর ভাষায় নিন্দা
জাবিউল্লাহ মুজাহিদ হামলাকে পাকিস্তানের 'বিশ্বাসঘাতকতা' বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, 'আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গ করেছে পাকিস্তান। উপযুক্ত সময়ে প্রতিশোধ নেওয়া হবে।' তিনি আরও দাবি করেন, পাকিস্তানের এই বিমান হামলা ‘মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে’ চালানো হয়েছে এবং এটি শুধু পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করবে।
আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ
আফগানিস্তানে নিযুক্ত পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত আব্দুল সালাম জাইফও কঠোর ভাষায় পাকিস্তানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, 'এটি পাকিস্তানের কাপুরুষতা ও দুর্নীতির প্রমাণ। যারা নিজেদের দেশেই স্থিতিশীলতা আনতে পারে না, তারা অন্য দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার গল্প বলে।' জাইফ নিহত শিশুদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নিহত শিশুদের হৃদয়বিদারক ছবি প্রকাশ
তালিবান কর্তৃপক্ষ নিহত শিশুদের ছবি প্রকাশ করেছে, যা দেশের অভ্যন্তর ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে। বোমায় চূর্ণ তাদের দেহ এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত ঘরবাড়ির দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোড়ন তুলেছে।
একই দিনে পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা
ঠিক যেদিন পাকিস্তানের ফেডারেল কনস্টেবুলারি সদর দফতরে এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তিন কমান্ডো নিহত ও ১২ জন আহত হয়, সেদিনই পাকিস্তান আফগানিস্তানে হামলা চালায়। অনেকেই এই ঘটনাকে পাকিস্তানের ‘সরাসরি প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে দেখছেন।