২০২৫ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয় পাকিস্তান। এখন মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব পেয়েছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চিন, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন) এবং ১০টি অস্থায়ী সদস্য অর্থাৎ কাউন্সিলের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে বর্ণানুক্রমিকভাবে এর সভাপতিত্ব পাল্টে চলেছে। প্রতিটি সদস্য এক মাসের জন্য সভাপতিত্ব করে। জুলাই মাসের জন্য পাকিস্তানের হাতে এসেছে সভাপত পদ। সভাতি পদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে একটি ফ্রন্ট খুলেছে এবং আবারও একই পুরনো কাশ্মীর সমস্যা উত্থাপন করেছে।
রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমেদ বলেছেন যে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। দ্বিপাক্ষিক বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকীকরণের চেষ্টা করে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে কাশ্মীরের বিতর্কিত সমস্যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গুরুতর উত্তেজনার বিষয় হিসাবে রয়ে গিয়েছে। নিউইয়র্ক সদর দফতরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'বিশ্বের এখন এই বিষয়ে কাজ করা দরকার। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কথা বলার এটাই সময় এবং আমি বলব যে এটা কেবল পাকিস্তানের দায়িত্ব নয়। আমরা এখানে অস্থায়ী, দুই বছরের জন্য অস্থায়ী সদস্য। আমি বিশ্বাস করি যে এটি নিরাপত্তা পরিষদের, বিশেষ করে পরিষদের স্থায়ী সদস্যদেরও একটি বিষয়, যাতে তারা বিধান অনুযায়ী এই সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেয়। এটাই একমাত্র উপায়।'
শিমলা চুক্তি বাতিল এবং কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের হইচই
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর জবাবে ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে। এর পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনের যুদ্ধ শুরু হয়। ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে হার নিশ্চিত বুঝেই পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে শিমলা চুক্তি বাতিল করে। এই চুক্তির অধীনে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে উভয় দেশ দ্বিপাক্ষিকভাবে পারস্পরিক বিষয়গুলি সমাধান করবে। আরেকটি বিষয় হল চুক্তিতে থাকাকালীন পাকিস্তান বহুবার বিশ্ব মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যু তুলেছে। শিমলা চুক্তি বাতিলের পর পাকিস্তান এখন আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতের সঙ্গে জড়িত দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি তোলার সুযোগ পেয়েছে।
তবে, মনে হচ্ছে না যে পাকিস্তান এই কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান খুব একটা সফল হবে। যাই হোক আমেরিকা এবং রাশিয়া রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যও, তারা ভারতের ঘনিষ্ঠ। ভারত সবসময় বলে আসছে যে কাশ্মীর সমস্যা তার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং কাশ্মীর ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা নিয়ে মোটেও আলোচনা করা উচিত নয়। ভারত স্পষ্টভাবে বলেছে যে যদি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হয়, তাহলে আলোচনা হবে অবৈধভাবে অধিকৃত কাশ্মীর ভারতে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে। এমন পরিস্থিতিতে মনে হয় না যে ভারতের বিরুদ্ধে তার লক্ষ্যে সফল হবে পাকিস্তান।