পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সাময়িকভাবে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর জেরে পাকিস্তানের কৃষিকাজের ক্ষতি হবে। তবে ভারতের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাল পাকিস্তান। তারা আইনানুগ পদক্ষেপ করবে। ভারতের সিদ্ধান্তকে বিশ্বের নজরে আনা হবে। আক্রমণ শানাল পাকিস্তান।
পাকিস্তানের শক্তি মন্ত্রী আওয়াইস লেঘারি ভারতের সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'ভারতের সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের যে সিদ্ধান্ত তা বেআইনি ও কাপুরুষোচিত। সিন্ধু নদীর প্রতিটি জলের বিন্দুতে পাকিস্তানের অধিকার রয়েছে। সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে তা আমরা রক্ষা করব। আইনগত, রাজনৈতিকভাবে এর মোকাবিলা করব। বিশ্বের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরব।'
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জখম ১৭। এই হামলায় পাকিস্তানের যোগ সামনে আসছে বলে দাবি করা হচ্ছে। দেশজুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, আপাতত পাকিস্তানের সঙ্গে জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখা হচ্ছে।
১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই চুক্তি। তখন ঠিক হয়েছিল, হিন্দু, ঝিলম ও চেনাব নদীর জল ব্যবহার করবে পাকিস্তান। রবি, বিয়াস ও শতদ্রু নদীর জল থাকবে ভারতের অধীনে। এতদিন ভারত এই নিয়ম মেনেই চলছিল। চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ায় ভারত এখন চাইলে পশ্চিম নদীগুলি থেকে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়াও বন্ধ করতে পারে। যেমন, কিশনগঙ্গা ও রাটলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাকিস্তানে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ছাড়ার নিয়ম ছিল, তা বন্ধ হতে পারে। এতে খরার সময় পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে জলঘাটতি দেখা দিতে পারে।
সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি বাতিলের জেরে পাকিস্তানের ৮০% কৃষিভিত্তিক এলাকা হিন্দু নদীর উপর নির্ভরশীল। জল কমলে গম, চাল, তুলো—এইসব প্রধান ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। চাষিরা ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হবেন, ফলে জলস্তর পড়ে যাবে।