পহেলগাঁও হামলার বদলা হিসেবে অপারেশন সিঁদুর করেছে ভারত। পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের সেনা। তবে পহেলগাঁওয়ের হামলাকারী জঙ্গিদের নিকেশ করতে এবার অপারেশন মহাদেব শুরু করেছে ভারত। যে অভিযানে সোমবার শ্রীনগরের অদূরে ৩ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে একজন বৈসরন উপত্যকায় হামলাকালী হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান শাহ বলে দাবি করা হয়েছে। এই নিয়ে এবার মুখ খুলল পাকিস্তান। অপারেশন মহাদেবে ৩ জঙ্গির মৃত্যুর ঘটনায় পাকিস্তান ক্ষুব্ধ। নিহত জঙ্গিদের 'নিরপরাধী' বলে অভিহিত করেছে ইসলামাবাদ।
জানা গিয়েছে, লস্কর-এ-তৈবার জঙ্গি সুলেমান পাক সেনাবাহিনীর এলিট ইউনিট স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের একজন প্রাক্তন কমান্ডো। সুলেমান ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুপ্রবেশ করে দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত ছিল। এই অভিযানে আরও দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, পাকিস্তানিদের আটক করে এনকাউন্টারে হত্যা করা হচ্ছে এবং তাদের জঙ্গি বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
পাক সংবাদপত্র ডন তাদের প্রতিবেদনে পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, 'অপারেশন মহাদেবের নামে ভারত ভুয়ো এনকাউন্টার করছে।' তারা আরও দাবি করেছে যে, নিরীহ পাকিস্তানিদের বলপূর্বক আটক করে তাদের জঙ্গি বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
তবে কাশ্মীরের জঙ্গলে একজন পাক নাগরিক স্যাটেলাইট ফোন এবং অস্ত্রের ভাণ্ডার নিয়ে কী করছিল, সে নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেনি ওই সংবাদপত্র। ঘটনাস্থল থেকে থেকে একটি M4 কার্বাইন রাইফেল, দুটি AK রাইফেল এবং অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনা। পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ চৌধুরী শরিফ দাবি করেছেন, ৭২৩ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারতীয় কারাগারে বন্দি। কিন্তু পাক সেনাবাহিনী জানায়নি যে, ওই ৭২৩ জন পাক নাগরিক কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে পৌঁছেছেন।
জিও নিউজ দাবি করেছে যে, এনকাউন্টার তত্ত্ব প্রমাণ করার জন্য ভারতীয় সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই জঙ্গিদের ছবি এবং অস্ত্র প্রকাশ করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ৫৬ জন পাকিস্তানিকে আটক করেছে। কিন্তু এই পাকিস্তানিরা কীভাবে ভারতীয় সীমান্তে পৌঁছেছিল, সে বিষয়ে মুখ খোলেনি।
পাকিস্তানের নিউজ চ্যানেল ৩৬৫ প্লাস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে ভারত এখন অপারেশন মহাদেব শুরু করেছে। এই অভিযানের নামে এনকাউন্টারে আটক 'নিরপরাধ' পাকিস্তানিদের ব্যবহার করছে।
ভারতীয় সেনার অফিসাররা জানিয়েছেন যে, গত ২২ এপ্রিলের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সুলেমান ওরফে আসিফকে সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী সঙ্কেত পেয়েছিল যে, পহেলগাঁও হামলায় জঙ্গিদের ব্যবহৃত স্যাটেলাইট ফোনটি আবার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পরেই সেনা অপারেশন মহাদেব শুরু করে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক কাশ্মীরি প্রাণ হারান। যে ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে।