পহেলগাঁও হামলার জবাবে ভারতের অপারেশন সিঁদুরে নাস্তানাবুদ হয়ে এবার মুসলিম দেশগুলিকে জোট করার ধান্ধায় নেমেছে পাকিস্তান। একা পারছে না, বোঝাই যাচ্ছে। পরিস্থিতি যে দিকে নিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ, তাতে প্রশ্ন উঠছে, ফের ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে পাকিস্তান? অপারেশন সিঁদুরে তো মুখ পুড়েছে।
দিবাস্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান
ধরুন, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে পাকিস্তানের। মার খাচ্ছে বেদম। শেষমেশ হাল ছেড়ে দিল। তখনই সৌদি আরব পাকিস্তানে F-15s ও ইউরোফাইটার টাইফুন পাঠাল ইসলামাবাদকে। পাকিস্তান ফের যুদ্ধে ফিরল। আসলে এই স্বপ্নেই বুঁদ হয়ে আছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তার কারণ, রিয়াধে গিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তান যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করে এল, তাতে মোদ্দা বিষয়, একজনের উপর আক্রমণ আসলে, উভয়ের উপরেইু আক্রমণ হিসেবে ধরা হবে। ঘুরিয়ে দেখতে গেলে, পাকিস্তান তাদের পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার খুলে দিল সৌদি আরবের কাছে।
পাকিস্তানের টার্গেট স্রেফ ভারত
এখন প্রশ্ন হল, পাকিস্তান যে ধান্ধায় এই ডিল করেছে বা দোহাতে মুসলিম NATO বাহিনী তৈরির তোড়জোড় করেছে, তাই একই উদ্দেশ্য কি সৌদি আরব কিংবা অন্যান্য মুসলিম দেশগুলির রয়েছে? বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের টার্গেট স্রেফ ভারত। কিন্তু পাকিস্তানের স্বার্থের সঙ্গে বাকিদের, বিশেষ করে সৌদি আরবের স্বার্থ তো মিলছে না। সে ক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের এই ডিলকে মূলত ইজরায়েলকে টার্গেট করে করা হয়েছে, বলাই যায়।
ভারতের জন্য এই চুক্তির মানে কী?
ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রতিরক্ষা চুক্তির অর্থ এই নয় যে পাকিস্তানের স্বার্থে সৌদি আরব ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে। বাস্তব পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা, আর ঘোষণার সময়ও তা স্পষ্ট করেছে। চুক্তিকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য ভুল ব্যাখ্যার আশঙ্কা এড়াতে সৌদি আরব তড়িঘড়ি স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এর কোনও ক্ষতি করবে না। বরং তারা জানিয়েছে, ভারত ও সৌদি সম্পর্ক এখন যেকোনও সময়ের থেকে আরও মজবুত।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক সৌদি আধিকারিক বলেন, এই চুক্তি কোনও নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বর্তমানে সবচেয়ে দৃঢ় অবস্থায় রয়েছে। আমরা এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাব এবং আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় যেভাবে পারি অবদান রাখব।
বস্তুত ভারতের সঙ্গে সৌদি আরবের বাণিজ্যের পরিমাণ পাকিস্তান ও সৌদি আরবের থেকে অনেক বেশি। ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার সৌদি আরব। সৌদি আরবের জন্য ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১.৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও রয়েছে।
পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাই সৌদি আরব ভারতের বিরুদ্ধে যাবে, এমন সম্ভাবনা কার্যত নেই।