পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করে বালুচ লিবারেশন আর্মি (BLA)। পণবন্দি করা হয় ২১৪ জন পাকিস্তানি নাগরিককে। তাদের মধ্যে জওয়ান, আধাসামরিক বাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দাও রয়েছেন। বিএলএ দাবি করেছে, পাকিস্তানের ৩০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়েছে। বিএলএ পাকিস্তানের জেলে বন্দি বালুচ বন্দিদের মুক্তির জন্য শাহবাজ শরিফ সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি সেনা-পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
বিএলএ-র স্পষ্ট দাবি, বালুচিস্তানকে একটি পৃথক দেশ হিসাবে ঘোষণা করা হোক। যা একটি পৃথক সরকার পরিচালনা করবে। বালুচদের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় দাবি বালুচিস্তানে কোনও পাকিস্তানি সংস্থা বা নিরাপত্তা সংস্থার কোনও প্রতিনিধি রাখা চলবে না।
এর বাইরে বালুচরা বিশ্বাস করে চিনের সঙ্গে সিপিইসি প্রকল্প চলছে। প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের খনিজ শোষণ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পের কারণে জনজাতির বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA) হল বৃহত্তম বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। পাকিস্তান, আমেরিকা এবং ব্রিটেনের মতো দেশগুলি বিএলএকে "সন্ত্রাসবাদী সংগঠন" হিসাবে বিবেচনা করে। এই গোষ্ঠীটি বালুচিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি ভবন এবং চিনা সেনাবাহিনী ও তাদের কর্মীদের লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়কালে এখানে চিনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ায়, বিএলএ তাদের হামলা আরও জোরদার করেছে। বিএলএ বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলা এবং বড় হামলার জন্যও দায়ী। BLA-এর আত্মঘাতী স্কোয়াড হিসেবে বিবেচিত মজিদ ব্রিগেড, ২০১৮ সালে করাচিতে চিনা দূতাবাসে হামলা এবং ২০১৯ সালে গোয়াদরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে হামলা সহ বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল হামলায় জড়িত ছিল।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, BLA-র অপহরণ করা ট্রেন থেকে ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১৭ জন আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই সময়ে ১৬ জন বিএলএ যোদ্ধা নিহত হয়। মোট ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।