'এখনও তোমায় ভালাবাসি, এবং বেসে যাব। ফিসে এসো।' পাকিস্তান থেকে ভারতে পালিয়ে আসা সীমা হায়দারের উদ্দেশে একথাই বলছেন তাঁর স্বামী গোলাম হায়দার। কাতর আবেদন করছেন তিনি। ২০১৯ সালে পাবজি খেলতে খেলতে সীমার আলাপ হয়েছি ভারতের এক যুবকের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে প্রেম হয়ে যায় সীমার। সেই প্রেমিকের কাছেই দেশ থেকে লুকিয়ে সন্তানদের নিয়ে নেপাল হয়ে ভারতে চলে আসেন সীমা। তার প্রথম স্বামী গোলাম হায়দার বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছেন। বলেছেন যে তিনি এখনও স্ত্রীকে ভালোবাসেন। একজন পাকিস্তানি ইউটিউবারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, গুলাম বলেছেন যে তিনি তাঁদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত। এবং চান সীমা তাঁর কাছে ফিরে যাক।
তিনি বলেন, "তুমি ভালো করেই জানেন তোমায় আমি কতটা ভালোবাসি। তোমার কিছু হলে, আমাদের বাচ্চাদের কী হবে তা ভেবে দেখ। কে দায়িত্ব নেবে? তাই বাচ্চাদের স্বার্থে, দয়া করে ফিরে এসো।"
গোলাম আরও বলেন, "আমি এখনও তোমাকে একইভাবে ভালবাসি এবং তা চালিয়ে যাবো। আমি বাচ্চাদের এবং তোমাকে অনেক মিস করি। কেউ তোমাকে কিছু বলবে না। আমি তোমাকে আমার সঙ্গে রাখব এবং আমরা আবার নতুন জীবন শুরু করব।"
মহসিন নামে এক পাকিস্তানি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে গোলাম হায়দার সীমাকে ফেরানোর আবেদন করেন। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি যদি পাকিস্তানে অনিরাপদ বোধ করেন তবে তিনি তাঁকে এবং বাচ্চাদের সৌদিতে নিয়ে যাবেন। এবং সেখানেই সংসার পাতবেন।
সীমার সন্তানদের 'হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান তুলতে দেখা যায় একটি ভিডিওতে। এর প্রতিক্রিয়ায় গোলাম বলেন, "ওরা শিশু। আপনি চাইলে পাকিস্তান জিন্দাবাদও বলবে।" তিনি জানান, তিনি আগে সীমাকে প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা পাঠাতেন। এবং পরে বাড়িয়ে ৮০-৯০ হাজার টাকা করেছিলেন। যাতে তাঁদের সন্তানদের ভালভাবে যত্ন নেওয়া যায়। গোলাম জানান, ওই সময় এত টাকা না থাকা সত্ত্বেও তিনি সীমাকে একটি বাড়ির জন্য ১৭ লাখ রুপি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সীমা তার নিজের বাড়ি কিনতে চায়।
গোলাম হায়দার শুধু তার স্ত্রীর ফিরে আসার অনুরোধই করেননি, তার সম্পর্কে মিথ্যা না ছড়ানোর জন্য মানুষের কাছে আবেদনও করেছিলেন। তিনি বলেন, কিছু লোক কিছু লাইকের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সীমাকে অপমান করছে, যা একেবারেই ভুল।
এর আগে, গোলাম তার স্ত্রী ও সন্তানদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আন্তরিক আবেদন করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর স্ত্রীকে পাবজি গেমের মাধ্যমে ভারতে যাওয়ার জন্য প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। গোলাম হায়দার নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিরাপদে পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের জন্য আবেদন করেন, যেখানে তারা আবারও পরিবার হিসেবে একত্রিত হতে পারে।
পাবজিতে কথা বলার সময় সীমা এবং শচীন প্রেমে পড়েন৷ তিনি অবৈধভাবে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। এবং দুজনে সীমার চার সন্তানের সঙ্গে গ্রেটার নয়ডার রাবুপুরা এলাকায় একটি ভাড়া অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে শুরু করেছিলেন৷ নেপাল হয়ে ভিসা ছাড়াই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ৪ জুলাই সীমাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে সাহায্য করার জন্য শচীনকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে শুক্রবার জামিন পেয়েছেন দুজনেই।