Pingu the Penguin: ছোট্ট একটা পেঙ্গুইন। নিজের ঘর থেকে একটু দূরে বেরিয়ে গিয়েছিল। আর সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে অনেকটা দূরে চলে গিয়েছিল। সেই রাস্তা মোটেই কম নয়। ৩,২১৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যায়। এরপর তো মহা সমস্যায় পড়ল। বাড়ি ফেরার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিল না।
বাড়ি থেকে অনেক দূরে
তার বাড়ি আন্টার্টিকায়। কিন্তু বুঝতেও পারেনি সে সাঁতার কাটতে কাটতে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ডের এক জায়গায়। বেচারা সে তো তখন পড়েছে মহা ফাঁপরে। সেটি এডিলি প্রজাতির একটা পেঙ্গুইন। যার নাম 'পিঙ্গু' (Pingu)।
তবে তার কোন সমস্যা হয়নি। তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় মানুষরা। তাঁরা দেখতে পান। এবং সময় নষ্ট না করে তাঁরা যোগাযোগ করেন, বিজ্ঞানী এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। ব্য, সুরাহা হল। সমস্যা কেটে যায়। আবার সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জলে নামার পর যেটা হয়েছিল সেটা হল সে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল। এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তারপর সাঁতার কাটতে কাটতে বা ভাসতে ভাসতে আন্টার্টিকা থেকে সেটি নিউজিল্যান্ডে পৌঁছে যায়। সেখানকার বর্ডলিঙ্গে পৌঁছে যায় সেটি। সেটিকে স্থানীয় মানুষ দেখতে পান। আর তার পরই তার নাম দেন পিঙ্গু (Pingu)। কারণ ওটা এক বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র।
কয়েকদিন আগের ঘটনা
দিন কয়েক আগের ঘটনা এটি। ১০ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটেছে। তারপর 'পিঙ্গু' (Pingu)-কে ক্রাইস্টচার্চের পেঙ্গুইন রেহ্যাবিলিটেশন সেন্টারেনিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে 'পিঙ্গু' (Pingu)-র চিকিৎসা করা হয়। মাঝ রাস্তায় খাবার-জল জোটেনি বেচারারা। দীর্ঘ পথ প্রোতে গিয়ে এত কষ্ট হয়েছিল তার ওজন কমে গিয়েছিল। শরীরে জলের অভাব দেখা দিয়েছিল।
সাঁতার কাটতে কাটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল
নিউজিল্যান্ডের কাইকোউরা ওয়াল্ডলাইফের অধিকর্তা জানিয়েছেন, 'পিঙ্গু' (Pingu)-র বয়স এক থেকে দু'বছরের মধ্যে। শরীর ঠিক করার জন্য অনেকটা তরল পদার্থ আর ফিশ স্মুদিজ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এরপর তাকে জলে ছেড়ে দেওয়া যাতে সে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। তবে সেটি বাড়ি ফেরার কোনও আগ্রহই দেখায়নি। সেখানে ছিল তাই তাকে ওখানেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন সে অনেকটাই সুস্থ আছে।
এর আগেও এসেছিল অ্য়ান্টার্কটিকা থেকে
আন্টার্কটিকা থেকে নিউজিল্যান্ড এই প্রথম কোনও প্রাণী এল, এমন নয়। এ হল তৃতীয় প্রাণী। প্রথম এমন ঘটনা ঘটেছিল ১৯৬২ সালে। তখন এক মৃত সামুদ্রিক প্রাণী আন্টার্টিকা থেকে চলে আসে নিউজিল্যান্ড। এরপর ১৯৯৩ সালে। সেখানে মানে নিউজিল্যান্ডের কাইকোউরা এলাকায় পাওয়া যায় এক অ্যাডিলি পেঙ্গুইন। অ্যান্টার্কটিকার যে ৫ ধরনের পেঙ্গুইন পাওয়া যায়, তারই একটি প্রজাতি।
ক্ষমতার থেকে ১০ গুণ বেশি সাঁতার কেটেছিল 'পিঙ্গু'
অন্যান্য পেঙ্গুইনের মতো মাছ, স্কুইড আর ক্রিল খায় এটি। সাধারণত পেঙ্গুইন ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সাঁতার কাটতে পারে। সেই ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তাই 'পিঙ্গু'র ৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করার ঘটনার কথা জানতে পেরে বেশ হয়রান বিজ্ঞানীরা।
তাও আবার খাবারের খোঁজে। যে কাজ নাকি খুবই কঠিন। এত লম্বা যাত্রা করার পরও সে যে সুরক্ষিত রয়েছে, এটাই মন ভাল করে দেওয়ার মতো সবথেকে বড় কথা।