PoK তে দাউ দাউ করে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। রাস্তায় গর্জন আন্দোলনকারীদের। চড়ছে স্লোগান। দৃশ্যতই অশান্ত পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)। মুজাফফরাবাদ, রাওয়ালাকোট, নীলম ভ্যালি, কোটলি সহ একাধিক জেলায় রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল গোটা অঞ্চল। এই আন্দোলনকে ইতিমধ্যেই সাম্প্রতিক কালের অন্যতম বৃহৎ গণআন্দোলন বলতে শুরু করেছেন পর্যবেক্ষকরা।
নিহত ১২, আহত ২০০ রও বেশি
প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২ জনের। তার মধ্যে পাঁচ জন মুজাফফরাবাদে, পাঁচ জন ধীরকোটে এবং দু’জন দাদিয়ালে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন ২০০ রও বেশি মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তা বাহিনী একাধিক জেলায় টহল বাড়িয়েছে।
স্লোগানে মুখর রাজপথ
রবিবার থেকেই ক্রমেই PoK র রাস্তায় রাস্তায় বেড়েছে স্লোগান। 'নারা এ কাশ্মীর', 'জিন্দা হ্যায় কাশ্মীর', 'হুক্মরানো, দেখ লো হাম তুমহারি মৌত হ্যায়' স্লোগানে গর্জে উঠেছেন আন্দোলনকারীরা। শোনা গিয়েছে 'ইনকিলাব আয়েগা', 'এই ভূমি আমাদের, ভাগ্যও আমরাই ঠিক করব' আহ্বান। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, 'পিওকের মানুষের রক্তেই বিদ্রোহের রক্ত।'
আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির ডাক
আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (AAC)। তাদের ডাকা 'শাটার ডাউন হুইল জ্যাম' আন্দোলনেই রবিবার স্তব্ধ হয়ে পড়ে মিরপুর, কোটলি, রাওয়ালাকোট, নীলম ভ্যালি, কেরান সহ একাধিক শহর। এএসি র নেতা শওকত নওয়াজ মির বলেন, '৭০ বছর ধরে আমাদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যথেষ্ট হয়েছে। অধিকার দাও, নয়তো জনরোষের মুখে পড়ো।'
তবে বড় অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এএসি আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ফের নতুন করে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
সরকারের কড়া অবস্থান
বিক্ষোভ রুখতে ইতিমধ্যেই পঞ্জাব থেকে সেনা কনভয় পাঠানো হয়েছে পিওকে তে। ইসলামাবাদ থেকেও আরও ১,০০০ পুলিশ মোতায়েন করেছে পাক সরকার। একাধিক এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রবেশ ও প্রস্থানপথে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
৩৮ দফা দাবি
দুর্নীতি, অবহেলা, মৌলিক অধিকার হরণ এর বিরুদ্ধে ৩৮ দফার দাবিপত্র দিয়েছে এএসি। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানে থাকা কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য বরাদ্দ ১২টি বিধানসভা আসন বাতিল, ন্যায্য বিদ্যুতের দাম, সস্তায় আটা সরবরাহ, এবং সামগ্রিক সংস্কার আনা।