আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের পারদ ক্রমশ চড়ছে। রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের এক মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় পদক্ষেপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার কাছে ২টি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এহেন পদক্ষেপের পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে পুতিনের দেশ। যার জেরে দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, মেদভেদেভের উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণেই সাবমেরিন পাঠানোর সিদ্ধান্ত তাঁকে নিতে হয়েছে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, এই সাবমেরিনগুলিকে যথাযথ এলাকায় পাঠানো হচ্ছে,যাতে মেদভেদেভের মন্তব্যে যদি কোনও হুমকি থাকে, তার জন্য আমেরিকা প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছেন যে, আমেরিকাকে সতর্ক থাকতে হবে। আমেরিকার মানুষদের রক্ষা করতে হবে।
রাশিয়ান এমপি ভোডোলাটস্কি জানিয়েছেন, দুটি আমেরিকান সাবমেরিন পাঠানো হয়েছে যা ইতিমধ্যেই তাদের নিশানায় রয়েছে। এখন আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি দৃঢ় চুক্তির প্রয়োজন, যাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি বন্ধ করা যায় এবং সমগ্র বিশ্বে শান্তি বজায় থাকে।
তবে পারমাণবিক সাবমেরিন বলতে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। এই সাবমেরিনগুলি কি পারমাণবিক শক্তিচালিত নাকি এতে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। মার্কিন নৌবাহিনী এবং পেন্টাগন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
গত কয়েকদিন ধরে ট্রাম্প এবং মেদভেদেভের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলছে। ট্রাম্প রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, আগামী ৮ অগাস্টের মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি না হলে রাশিয়া এবং তার তেল ক্রয়কারী দেশগুলির উপর মোটা অঙ্কের শুল্ক লাগু করা হবে। এই সময়সীমা এখন মাত্র ৬ দিন বাকি। এর জবাবে মেদভেদেভ পাল্টা হুঙ্কার দেন। গত ৩১ জুলাই মেদভেদেভ বলেন যে, ট্রাম্পের মনে রাখা উচিত, রাশিয়ার পরমাণু হামলার ক্ষমতা রয়েছে। মেদভেদেভ আরও বলেছেন যে, রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন গত ১ আগস্ট বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার আশা করেন। কিন্তু তাঁর শর্তগুলি ইউক্রেনের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য, অতীতে পুতিনের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল ট্রাম্পের। তবে এখন সেই সম্পর্ক তলানিতে। পুতিনের উপর বরং এখন অনেকটাই ক্ষিপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে এমন উত্তেজনার আবহে ভারতেও প্রভাব পড়তে পারে। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ইতিমধ্যেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়ার থেকে তেল এবং সামরিক সরঞ্জাম কেনে ভারত। ফলে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সংঘাত তীব্র হলে এ দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।