অবশেষে এল সেই দিন। থাইল্যান্ডে মুখোমুখি বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। আজ অর্থাত্ শুক্রবার থাইল্যান্ডে BIMSTEC সামিটের ফাঁকেই বৈঠক হল। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আসার পর এই প্রথম মোদী ও ইউনূস মুখোমুখি বসলেন। এদিন ছবিতে দেখা গেল, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে মোদী ও ইউনূস করমর্দন করলেন।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠক?
এই বৈঠকের অনুরোধ করেছিলেন মহম্মদ ইউনূস নিজেই। যা ভারত গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে বেশ উত্তপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলন, আগাম নির্বাচনের দাবি এবং আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে ইউনূসের ভূমিকা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে তিনি চিন সফর করেছেন, যেখানে তাঁর কিছু মন্তব্য ভারতের জন্য অস্বস্তিকর বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে?
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আঞ্চলিক কৌশলগত দিক নিয়ে দিল্লি সতর্ক নজর রাখছে। ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি চিঠিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। একইসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যা দুই দেশের বন্ধুত্বের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।
সরকারি নৈশভোজে একসঙ্গে মোদী ও ইউনূস
বৃহস্পতিবার বিমসটেক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ইউনূসকে একসঙ্গে বসতে দেখা গেছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের কূটনৈতিক সমীকরণে এটি যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে, তা নিশ্চিত।