রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও তীব্র হল। শনিবার রাতভর ইউক্রেনের রাজধানী কিভে রাশিয়ার চালানো হামলায় কেঁপে উঠল গোটা শহর। ইউক্রেনীয় সামরিক প্রশাসনের প্রধান তৈমুর তাকাচেঙ্কো জানান, এই হামলায় প্রথমবারের মতো কিভে পেচেরস্কি জেলার মন্ত্রিপরিষদ ভবনে আগুন লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরকারি সদর দফতর থেকে ঘন ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর দাবি, রাশিয়া এক রাতেই ৮০৫টি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে অনেকগুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানান, ড্রোন আক্রমণের পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছিল। তাতে এক নবজাতকসহ অন্তত ৩ জন নিহত ও প্রায় ১৮ জন আহত হয়েছেন।
আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি
রাজ্যের জরুরি প্রশাসন জানিয়েছে, ডারনিটস্কি জেলায় চারতলা একটি বসত বাড়ির অর্ধেক অংশ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। পশ্চিম কিভের স্বিয়াতোশিনস্কি এলাকার একটি ন'তলা বিল্ডিংয়ের একাধিক তলা ধসে পড়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আরও দুটি বহুতলে আগুন লাগে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, রাতভর আতঙ্কে কাটিয়েছেন তারা।
ইউক্রেনের অভিযোগ
তাকাচেঙ্কো অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ নাগরিক ও আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। দক্ষিণ ইউক্রেনের ওডেসায়ও একাধিক আবাসিক ব্লক ও সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেমেনচুকে বিস্ফোরণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ক্রিভি রিহ শহরে পরিবহন ও শহরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় প্রশাসক ওলেক্সান্ডার ভিলকুল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মস্কো এই হামলার বিষয়ে এখনো কোনও মন্তব্য করেনি। তবে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। অন্যদিকে, পোলিশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পশ্চিম ইউক্রেন বিমান হামলার আশঙ্কা থাকায় তারা মিত্র দেশগুলির সঙ্গে বিমান নিরাপত্তায় জোর দিচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলা যুদ্ধের ফলে ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, কিয়েভে এই আক্রমণ যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। এবং আন্তর্জাতিক মহলে রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।