রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) মধ্যে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের (Nuclear Weapons) প্রথম মজুত এখন বেলারুশে (Belarus) পৌঁছেছে। দ্য হিলের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (President Vladimir Putin) শুক্রবার বলেছেন যে মস্কো তার প্রথম পরমাণু অস্ত্রের মজুত বেলারুশে পাঠিয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন বলেন, গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ বাকি পারমাণবিক অস্ত্র পাঠানো হবে।
পুতিনের হুঁশিয়ারি
ইউক্রেন সীমান্তবর্তী দেশটিতে পারমাণবিক বোমা মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা রাশিয়া এবং এর কৌশলগত পরাজয় নিয়ে চিন্তা করেন তাঁদের সবার বিরুদ্ধে এটি একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। রাশিয়ান নেতার এই মন্তব্যটি বেলারুশিয়ান রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর দাবির সত্যতা নিশ্চিত করে যেখানে তিনি বলেছিলেন যে তাঁর দেশ রাশিয়া থেকে বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম মজুত পেয়েছে।
প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে পারমাণবিক অস্ত্র
লুকাশেঙ্কো রাশিয়ান এবং বেলারুশিয়ান রাষ্ট্রীয় মিডিয়াকে বলেছেন, 'আমাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা রয়েছে, যা আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে পেয়েছি। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে এই বোমাগুলো তিনগুণ বেশি শক্তিশালী।' বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ঘোষণা করেছেন যে বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ শুরু করেছে রাশিয়া। ১৯৯১ সালের পর প্রথমবারের মতো রাশিয়া বিদেশের মাটিতে পারমাণবিক অস্ত্র মজুত করেছে।
বেলারুশ রাশিয়ার প্রধান মিত্র
এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে লুকাশেঙ্কোকে রাশিয়ার প্রধান মিত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মজার বিষয় হল, বেলারুশ ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই সীমানা ভাগ করে নেয়। রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল, তখন এটি বেলারুশকে লঞ্চপ্যাড হিসাবে ব্যবহার করেছিল এবং তার যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করেছিল। লুকাশেঙ্কোর কথা বলতে গেলে, তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। ২০২০ সালে লুকাশেঙ্কো টানা ষষ্ঠবারের জন্য বেলারুশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, যদিও এই নির্বাচনটি বিতর্কিত ছিল এবং দেশে প্রচুর হিংসা হয়েছিল।
রাশিয়ার কত অস্ত্র আছে?
রাশিয়ার কতগুলো কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র আছে, এর জন্য কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে আমেরিকা বিশ্বাস করে রাশিয়ার কাছে এ ধরনের দুই হাজার অস্ত্র থাকতে পারে। যেখানে আমেরিকার কাছে মাত্র ২০০টি অস্ত্র রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র, টর্পেডো এবং বোমার মাধ্যমে এই অস্ত্রগুলি ফেলা যায়। শুধু তাই নয়, একটি নির্দিষ্ট এলাকায় নিয়ে গিয়ে সেখানে বিস্ফোরণও করা যেতে পারে। আমেরিকা ইউরোপের অনেক দেশে তার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে। এসব অস্ত্র রয়েছে ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডে। সংবাদ সংস্থার মতে, এই অস্ত্রগুলির ওজন ১৭০ কেজি পর্যন্ত।