Advertisement

হিরোশিমায় ফেলা বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী, পুতিনের পোসেইডন এতটাই বিপজ্জনক

পোসেইডন, যা পূর্বে স্ট্যাটাস-৬ বা ক্যানিয়ন নামে পরিচিত ছিল, একটি রাশিয়ান স্ব-চালিত ডুবো যান। এটি এক ধরনের ড্রোন, যা সমুদ্রে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করতে পারে। এটি একটি সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং একটি পরমাণু ইঞ্জিন দ্বারা চালিত হয়।

হিরোশিমায় ফেলা বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী, পুতিনের পোসেইডন এতটাই বিপজ্জনকহিরোশিমায় ফেলা বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী, পুতিনের পোসেইডন এতটাই বিপজ্জনক
Aajtak Bangla
  • নতুন দিল্লি,
  • 30 Oct 2025,
  • अपडेटेड 1:16 PM IST
  • পোসেইডন, যা পূর্বে স্ট্যাটাস-৬ বা ক্যানিয়ন নামে পরিচিত ছিল, একটি রাশিয়ান স্ব-চালিত ডুবো যান
  • এটি এক ধরনের ড্রোন, যা সমুদ্রে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করতে পারে

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২৯ অক্টোবর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া পোসেইডন নামক একটি পরমাণু শক্তিচালিত বিশাল টর্পেডোর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এটি একটি জলে নীচে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল। পুতিন এটিকে "বিশ্বে অতুলনীয়" বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে এটি সারমাট আইসিবিএম-র চেয়েও বেশি শক্তিশালী। এই অস্ত্রটি পরমাণ ওয়ারহেড বহন করতে পারে। এটিকে বিপর্যয়ের টর্পেডো বলা হয়। কিন্তু এটি কী? এর সম্পূর্ণ স্পেসিফিকেশন কী? কোন দেশগুলি এর পরিসরের মধ্যে রয়েছে? এটি কতটা বিপজ্জনক? আসুন জানার চেষ্টা করি।

পোসেইডন কী?

পোসেইডন, যা পূর্বে স্ট্যাটাস-৬ বা ক্যানিয়ন নামে পরিচিত ছিল, একটি রাশিয়ান স্ব-চালিত ডুবো যান। এটি এক ধরনের ড্রোন, যা সমুদ্রে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করতে পারে। এটি একটি সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং একটি পরমাণু ইঞ্জিন দ্বারা চালিত হয়। যদি ভারত এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে, তাহলে সমগ্র বন্দর এবং করাচি শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এর উদ্দেশ্য শত্রুর উপকূলীয় অঞ্চলে আক্রমণ করা। রাশিয়া এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য ডিজাইন করেছে। এই অস্ত্রটি ২০১৫ সাল থেকে তৈরি করা হচ্ছে। পুতিন বলেন, এর সফল পরীক্ষা একটি বড় সাফল্য। এর আগে, রাশিয়াও বুরেভেস্টনিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে। দুটি অস্ত্রই রাশিয়ার পরমাণু শক্তি প্রদর্শনের জন্য তৈরি।

আরও পড়ুন

পোসেইডনের সম্পূর্ণ স্পেসিফিকেশন

পোসেইডন কোনও সাধারণ টর্পেডো নয়। এটি খুব বড় এবং উন্নত। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি এখানে...

  • দৈর্ঘ্য: প্রায় ২৪ মিটার (একটি বড় বাসের মতো লম্বা)।
  • প্রস্থ: ২ মিটার।
  • ওজন: প্রায় ১০০ টন।
  • গতি: জলের নীচে প্রতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। এটি এত দ্রুত যে কোনও সাধারণ নৌবাহিনী এটি ধরতে পারবে না।
  • গভীরতা: এটি ১,০০০ মিটার পর্যন্ত ডুব দিতে পারে। সাধারণ টর্পেডো এই গভীরতার মাত্র অর্ধেক যেতে পারে।
  • পরিসীমা: সীমাহীন! এটি পরমাণু শক্তিচালিত, তাই এটি কয়েক মাস ধরে সমুদ্রে ভ্রমণ করতে পারে। এটি ১৪,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি ভ্রমণ করতে পারে।
  • ওয়ারহেড: একটি ২-মেগাটন পরমাণু বোমা (হিরোশিমা বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী)। কোবাল্ট যোগ করা যেতে পারে, যা তেজস্ক্রিয় ধুলো ছড়িয়ে দেবে।
  • ইঞ্জিন: একটি তরল-ধাতু-ঠান্ডা পরমাণু চুল্লি, যা এটিকে জ্বালানি ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে চলতে দেয়।
  • নেভিগেশন: এটি জিপিএস এবং নিজস্ব সিস্টেম ব্যবহার করে নেভিগেট করে। এই সবই পোসেইডনকে একটি সুপার টর্পেডো করে তোলে যা প্রচলিত অস্ত্রকে ছাড়িয়ে যায়।

পোসেইডনের পরিসর: কোন দেশগুলি ঝুঁকিতে রয়েছে?

পোসেইডনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হল এর পরিসর। এটি আন্তঃমহাদেশীয়, যার অর্থ এটি মহাদেশের মধ্যে ভ্রমণ করতে পারে। যদি রাশিয়ান সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়, তবে এটি আমেরিকা, সমগ্র পূর্ব এবং পশ্চিম উপকূল আক্রমণ করতে পারে (যেমন, নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ওয়াশিংটন)। রাশিয়া দাবি করেছে যে এটি বিশেষভাবে আমেরিকান শহরগুলিকে টার্গেট করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।

Advertisement
  • ইউরোপ: ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো দেশের উপকূলীয় অঞ্চল (লন্ডন এবং প্যারিসের কাছে)।
  • এশিয়া: জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চিনের উপকূলীয় শহরগুলি।
  • অন্যান্য: ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের প্রধান বন্দরগুলিও ঝুঁকিতে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, বিশ্বের ৮০% উপকূলীয় শহর এর আওতায়। এটি আর্কটিক মহাসাগর থেকে উৎক্ষেপণ হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পৌঁছতে পারে। রাশিয়া ৩০টি এরকম অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে।

 

পসেইডন কতটা বিপজ্জনক?

এই অস্ত্রটি এতটাই বিপজ্জনক যে একে "ডুমসডে ওয়েপন" বলা হয়। ২ মেগাটন বোমা লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করতে পারে। কিন্তু আসল বিপদটি পরবর্তীতে। এটি উপকূলীয় অঞ্চলে বিস্ফোরিত হবে, যার ফলে ৫০০ মিটার উঁচু পর্যন্ত তেজস্ক্রিয় তরঙ্গ তৈরি হবে। এই তরঙ্গগুলি শহরগুলিকে প্লাবিত করবে এবং তেজস্ক্রিয় জল ছড়িয়ে দেবে, যার ফলে অঞ্চলগুলি বছরের পর বছর ধরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। যদি কোবাল্ট যোগ করা হয়, তবে এটি একটি নোংরা বোমায় পরিণত হবে। এটি বাতাসে বিষাক্ত পদার্থ নির্গত করবে, যার ফলে ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হবে। এর সমগ্র সভ্যতা ধ্বংস করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি এত গভীরতা এবং গতিতে ভ্রমণ করে যে কোনও রাডার বা সোনার এটি শনাক্ত করতে সক্ষম হবে না। এটি নীরবে শত্রুর কাছে পৌঁছয়। যদি ব্যবহার করা হয়, তবে কেবল একটি দেশ নয়, সমগ্র বিশ্ব প্রভাবিত হবে। সামুদ্রিক জীবন ধ্বংস হতে পারে, জলবায়ু পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং পরমাণু শীতকাল আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই অস্ত্র যুদ্ধকে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো এটি প্রতিরোধের জন্য নতুন প্রযুক্তি তৈরি করছে, কিন্তু এই মুহূর্তে এটি রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পুতিনের ঘোষণা এসেছে, যা বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

Read more!
Advertisement
Advertisement