Advertisement

সিন্ধু, বালুচিস্তান ও গিলগিট-বালতিস্তান, কে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা চায়?

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ এবং পুরো দেশ ঋণের টাকায় চলছে। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারী প্রতিবেশী দেশটি তার নাগরিকদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাও দিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অনেক জায়গায় বিদ্রোহের কণ্ঠ আরও জোরদার হয়ে উঠেছে।

সিন্ধু, বালুচিস্তান ও গিলগিট-বালতিস্তান, কে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা চায়?সিন্ধু, বালুচিস্তান ও গিলগিট-বালতিস্তান, কে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা চায়?
Aajtak Bangla
  • নতুন দিল্লি,
  • 22 May 2025,
  • अपडेटेड 4:10 PM IST
  • বালুচিস্তানের মতো সিন্ধুতেও মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে
  • পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে এখানকার মানুষের জুডিশিয়াল হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ এবং পুরো দেশ ঋণের টাকায় চলছে। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারী প্রতিবেশী দেশটি তার নাগরিকদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাও দিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অনেক জায়গায় বিদ্রোহের কণ্ঠ আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। বালুচিস্তান ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের দখল থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এবং এখন সিন্ধু প্রদেশেও বিদ্রোহ শুরু হয়েছে।

সিন্ধুর স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ

সিন্ধুর জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী এবং সাধারণ মানুষ স্বাধীনতার দাবিতে অনড়, পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। সিন্ধু জাতির পক্ষে কথা বলা একটি দল সম্প্রতি পাকিস্তানের জেলে বন্দী সিন্ধি নাগরিকদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে। সিন্ধু প্রদেশে, জয় সিন্ধু ফ্রিডম মুভমেন্ট (জেএসএফএম) নামে একটি সংগঠন পাকিস্তানের দখল থেকে মুক্তির দাবি তুলেছে।

আরও পড়ুন

সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন যে পাকিস্তান সরকার বহু মানুষকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই ধরনের মানুষদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে এবং তাঁদের অপহরণ করে আন্দোলন দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সিন্ধু জাতীয়তাবাদীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন এরপর ব্যাপক আন্দোলন শুরু করা হবে।

সিন্ধু স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতারা বলছেন যে তাঁদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ এবং তাঁরা তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন। সিন্ধু পৃথক দেশ না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের প্রতিবাদ চলতেই থাকবে। সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা রাষ্ট্রসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলিকে মানবাধিকার রক্ষায় হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করেছেন। সিন্ধুতে স্বাধীনতার দাবি কয়েক দশকের পুরনো এবং পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সেখানকার জনগণের সিন্ধি পরিচয় এবং অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বালুচিস্তানের মতো সিন্ধুতেও মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে এবং পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে এখানকার মানুষের জুডিশিয়াল হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। পাকিস্তান সরকার সিন্ধুর সাংস্কৃতিক পরিচয় ধ্বংস করার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করছে।

Advertisement

বালুচিস্তানের স্বাধীনতার ঘোষণা

সিন্ধুর মতো বালুচিস্তানেও পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার দাবি তীব্রতর হয়েছে। গত সপ্তাহে, কর্মী মীর ইয়ার বালুচ সোশ্যাল মিডিয়ায় বালুচিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন এবং এই অঞ্চলটিকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছিলেন। তিনি ভারত সরকারের কাছে দিল্লিতে বালুচিস্তানের দূতাবাস খুলতে দেওয়ার জন্যও আবেদন করেছিলেন।

স্বাধীনতার লড়াইয়ে বালোচ যোদ্ধারা পাকিস্তান সরকার এবং সেনাবাহিনীকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। সম্প্রতি, জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করার পর বালোচ লিবারেশন আর্মি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উপর এক ভয়াবহ আক্রমণ চালায়, যেখানে ৯০ জন সেনা নিহত হয় বলে জানা গিয়েছে। বালুচিস্তানের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতার দাবি করে আসছে, পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ এনেছে এবং এর জন্য তারা নিজস্ব সেনাবাহিনীও তৈরি করেছে।

বালোচ নেতারা অভিযোগ করেন যে পাকিস্তান সরকার তাঁদের সম্পদ ব্যবহার করছে এবং সেখানকার জনগণ বিনিময়ে কোনও সুবিধা পাচ্ছে না।

বিদ্রোহের সবচেয়ে বড় কারণও এটি

১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় বালুচিস্তান ভারত বা পাকিস্তানের অংশ ছিল না এবং একটি পৃথক দেশ ছিল। তবে, পরবর্তীতে পাকিস্তান জোর করে এই সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা দখল করে নেয় এবং এর ফলে সেখানে অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিক্ষোভ চলছে।

গিলগিট-বালতিস্তানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা

গিলগিট-বালতিস্তানেও বিদ্রোহ চরমে পৌঁছেছে। এটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (POK) উত্তরাঞ্চল এবং এখানকার চরমপন্থী সংগঠনগুলি তাদের পৃথক দেশের নাম - বালওয়ারিস্তান অর্থাৎ উচ্চতার দেশ -ও ঠিক করেছে। এই এলাকার ভৌগোলিক গঠনকে এই নামকরণের কারণ বলে মনে করা হয়। কারণ এই সমগ্র এলাকাটি পাহাড় এবং উপত্যকা দ্বারা বেষ্টিত। এখানকার নেতারা অভিযোগ করেন যে পাকিস্তানের সেরা পর্যটন কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও সরকার এই অঞ্চলের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এবং এখানে সরকারি পরিকল্পনাগুলি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয় না। এই কারণে গিলগিট-বালতিস্তানে স্বাধীনতার দাবি উঠেছে।

গিলগিট-বালতিস্তানের জনগণকে পাকিস্তান সরকার দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং ইসলামাবাদে তৈরি নীতি এই অঞ্চলে পৌঁছয় না। এমনকি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও প্রথমে পঞ্জাব প্রদেশ এবং পাকিস্তানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিবহন করা হয় এবং তারপর এই এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে এখানকার মানুষ সৎ মায়ের আচরণে অতিষ্ঠ এবং এই এলাকায় খাদ্য সামগ্রীরও অভাব দেখা দিয়েছে।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করা হয়েছে

পাকিস্তান ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, কাশ্মীরের অর্ধেক অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে এবং সেই অঞ্চলটি PoK নামে পরিচিত। পাকিস্তান ভারতবিরোধী কার্যকলাপ চালানোর জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীর ব্যবহার করেছে এবং সেখানে জঙ্গি লঞ্চ প্যাড রয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ ভারতের সঙ্গে মিশে যেতে চায়। ভারতও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং শুধুমাত্র PoK ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতদিন পাকিস্তান বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ফোরামে কাশ্মীর ইস্যুতে মিথ্যা প্রচার করত। কিন্তু এখন ভারত স্পষ্টভাবে বলেছে যে কাশ্মীর আলোচনার বিষয় নয় এবং এখন পাকিস্তানের সঙ্গে যে কোনও ধরনের আলোচনা কেবল পিওকে ফেরত দেওয়ার বিষয়েই সম্ভব।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থার যেভাবে অবনতি হচ্ছে, তাতে বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহ দমন করা সেখানকার সরকারের পক্ষে বেশি দিন সহজ হবে না। সকল এলাকা থেকে একই রকম আওয়াজ আসছে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করার জন্য মানুষ পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন দেশ গঠন করতে চায়।
 

Read more!
Advertisement
Advertisement