গাজার হামাস জঙ্গিদের শায়েস্তা করতে নয়া পদক্ষেপ ইজরায়েলের। টানেল থেকে সন্ত্রাসবাদীমূলক কাজকর্ম চালাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীরা। এবার সেই টানেল বন্ধ করতে তৎপর ইজরায়েল। সেজন্য একটি বিশেষ বোমা তারা তৈরি করেছে। মজার বিষয় হল, সেই বোমা থেকে বিস্ফোরণ হয় না। কিন্তু, যেখানে সেই বোমা ফেলা হয় সেখানে প্রচুর ফেনা বের হয়। আর সেই ফেনা আবার পরে পাথরের মত শক্ত হয়ে যায়। ইজরায়েলের লক্ষ্য এই বোমা দিয়ে সুরঙ্গ বা টানেল বন্ধ করা। এমনকী টানেলে সেই সময় কোনও জঙ্গি উপস্থিত থাকলে সেও পরিণত হবে শক্ত পাথরে।
এই বোমার বিশেষত্ব
ইজরায়েল এমনিতেই অস্ত্রের জন্য গোটা বিশ্বে বিখ্যাত। তারা নানা অস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সারাবছর। ইজরায়েল থেকে বিভিন্ন দেশও অস্ত্র কেনে। এবার সেই ইজরায়েল স্পঞ্জ বোমা তৈরি করে ফেলেছে। হামাস জঙ্গিদের সবক শেখানোর জন্য সুরঙ্গগুলো বন্ধ করা খুবই প্রয়োজনীয় বলে মনে করছে সেদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী। কারণ এই সুরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা বা সেখানে লুকিয়ে থাকে।
ইজরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী মনে করছে, এই সুরঙ্গগুলোতে হামাস জঙ্গিরা অস্ত্রও লুকিয়ে রাখে। সেখান থেকে রকেটও ছোড়া হয়। সেই সব সুরঙ্গ যদি মাটি বা সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করা হয় তাহলে অনেক সময় লাগবে। তাই সময় ও অর্থের অপচয় আটকাতে স্পঞ্জ বোমা ব্যবহার করতে চলেছে ইজরায়েল।
বিশ্বে স্পঞ্জ বোমার এই প্রথম ব্যবহার
গোটা বিশ্বে এর আগে স্পঞ্জ বোমা ব্যবহৃত হয়নি। সম্ভবত প্রথমবার এর ব্যবহার হচ্ছে। এই বোমা ফাটার পর প্রচুর ফেনা নির্গত করে। আর সেই ফেনা অল্প সময়ের মধ্যে কংক্রিটের মতো শক্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ এই বোমাগুলো সুড়ঙ্গে ফেটে গেলে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। ভিতর থেকে কেউ বের হতেও পারবে না। বাইরে থেকে কেউ ভেতরে প্রবেশও করতে পারবে না।
কীভাবে একটি স্পঞ্জ বোমা কাজ করে?
এই স্পঞ্জ বোমাটি একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে থাকে। সেখানে দুটি ভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। এই রাসায়নিকগুলি একটি ধাতব প্লেট বা রড দ্বারা আলাদা রাখা হয়। সেই রড সরানো মাত্র দুটো রাসায়নিক মিশে যায়। তখন একটি ফেনাযুক্ত তরল ইমালসন তৈরি করে। যা বাতাসের সংস্পর্শে এলেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমাগত তা পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। যতদূর ছড়ায় সেই ফেনা ততদূর থাকে শক্ত পাথরের বিস্তার।
এর আগে ইজরায়েলি কমান্ডোরা যখন সুড়ঙ্গ হানা দিয়েছিল, তখনই তারা দেখেছিল টানেলগুলো জঙ্গিদের আখড়া। ইজরায়েলি সেনারা তখনই অনুভব করে যে, সেই সুড়ঙ্গগুলো বন্ধ রাখা দরকার। তারপরই স্পঞ্জবোমার পরিকল্পনা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই স্পঞ্জ বোমা জঙ্গিদের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হতে পারে। তাতে জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত কমবে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা এই ধরনের বুলেট আগে ব্যবহার করেছিল ১৯৯০-এর দশকে। সোমালিয়ায় দাঙ্গাবাজদের নিয়ন্ত্রণ করতে ইউএস আর্মি আল্ট্রা-স্টিকি ফোম বুলেট ব্যবহার করেছিল। সেই গুলি থেকে বের হওয়া ফেনা জঙ্গিদের হাত পা বেঁধে রাখত। এভাবেই তাদের গ্রেফতার করত আমেরিকা সেনা।