জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর পর ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছে। এছাড়াও পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করার মতো বেশ কয়েকটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে পাকিস্তান ক্ষুব্ধ। চাপে পড়ে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন। শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে ইসলামাবাদে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের তিন সেনাপ্রধান, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, শীর্ষ সামরিক কর্তারা এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ছিলেন।
পাকিস্তানি সাংবাদমাধ্যম জানিয়েছে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ভারত যদি সিন্ধু চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের ভাগের জল বন্ধ করার বা দিক পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, তাহলে তা যুদ্ধের কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। এর পাশাপাশি, পাকিস্তান ভারতের সমস্ত বিমান সংস্থার জন্য তাঁর আকাশসীমা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে যে, বৈঠকে পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের মৃত্যুর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং ২৩ এপ্রিল ভারতের নেওয়া পদক্ষেপগুলিকে একতরফা, অন্যায্য, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আইনত ভিত্তিহীন বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) অভিযোগ করেছে যে ভারতে মুসলিম-সহ সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়াকফ আইনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রান্তিক করার অভিযোগও করেছে। এনএসসি অভিযোগ করেছে যে ভারত এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বলেছে যে কাশ্মীর সমস্যা এখনও অমীমাংসিত। কমিটি বলেছে যে কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি অমীমাংসিত বিরোধ, যা রাষ্ট্রসংঘের অনেক প্রস্তাবেও স্বীকৃত। পাকিস্তান কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সমর্থন করে যাবে।
পাকিস্তানের এনএসসি বৈঠকে কী হল?
পাকিস্তান আরও দাবি করেছে যে তাদের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষার জন্য যে কোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তারা ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলিকে 'দ্বিজাতি তত্ত্বের' সত্যতার প্রমাণ বলেও অভিহিত করেছে। আরও বলেছে যে মহম্মদ আলু জিন্নাহর ১৯৪০ সালের পাকিস্তান প্রস্তাবনা আজও সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক।