
পাকিস্তান বারবারই দাবি করে যে তালিবান নাকি তাদের দেশে জঙ্গিহানা চালাচ্ছে। তাদের জন্য প্রাণ হারাচ্ছে পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিক। যদিও সেই দাবি একবারে উড়িয়ে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানালেন, তালিবান সরকার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করছে। পাশাপাশি আফিম চাষেও লাগিয়েছে লাগাম। যার ফলে পাকিস্তানের থোঁতা মুখ তিনি ভোঁতা করে দিলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আসলে ২ দিনের ভারত সফরে এসেছিলেন পুতিন। তার আগে এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দেন ইন্ডিয়া টুডে আজতককে। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, কেন রাশিয়া আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকার করে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরেই কাবুলের তালিবান সরকারকে দোষারোপ করে আসছে পাকিস্তান। তাদের মতে, এই সরকার নাকি ভারতের হাতের পুতুল। মোদী সরকার যেমনটা বলে, তারাও ঠিক তেমনটাই করে। পাশাপাশি তালিবান সরকার নাকি তেহেরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে সাহায্য করে সেই দেশে জঙ্গিহানা চালাচ্ছে বলেও দাবি করে শেহবাজ শরিফের দেশ।
অবশ্য আজতক-এর সঙ্গে কথা বলার সময় পাকিস্তানের এই দাবিগুলিকে উড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। তিনি জানিয়েছেন, 'সব দেশেরই একাধিক সমস্যা রয়েছে। আফগানিস্তানও এর বাইরে নয়। দশকের পর দশক এই দেশটি গৃহ যুদ্ধ দেখেছে। তবে বর্তমানে এই দেশটাকে চালায় তালিবানরা। এটাই বাস্তব। এটাকে স্বীকার করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আফগানিস্তানের সরকার জঙ্গি এবং সংগঠনের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেমন ধরুন ISIL এবং তাদের মতো অনেকের বিরুদ্ধে চলছে লড়াই। আর এটা আমরা ভালো করেই জানি।'
মাথায় রাখতে হবে, রাশিয়া প্রথম থেকেই এই তালিবান সরকার মেনে নিয়েছে। তারাই সারা বিশ্বে প্রথম আফগানিস্তানের তলিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।
পুতিন এই বিষয়ে আরও বলেন, 'আফগানিস্তানের সরকার সেই দেশে আফিম উৎপাদনে রাশ টানতে চাইছে। পাশাপাশি সীমান্তে ড্রাগজনিত সমস্যার করতে চাইছে সমাধান।'
আর রাশিয়ার সরকার যে আফগানিস্তানের ভাল সম্পর্ক রেখে যাবে, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন পুতিন। তাঁর কথায়, 'এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। আসলে কোনও দেশে কী ঘটছে, সেটা বোঝার জন্য সেই দেশের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। আর আমরা তাই করছি।'
মাথায় রাখতে হবে, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে খুবই ঝামেলা চলছে। একে উপরের উপর আক্রমণ করতেও পিছপা হচ্ছে না দুই পক্ষই। এমন পরিস্থিতিতে রোজই সাধারণ মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে। আর এই ঘটনার জন্য তালিবান সরকারকেই দোষারোপ করে পাকিস্তান। তবে তাদের দাবি এ বার উড়িয়ে দিলেন পুতিন। বরং উল্টে পাকিস্তানকেই পরোক্ষে দায়ী করলেন সমস্যার জন্য।