কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং টেরর ফান্ডিং মামলায় জেলে বন্দি ইয়াসিন মালিকের স্ত্রী মুশাল হুসেন পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারে মন্ত্রী হতে চলেছেন। পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পদত্যাগের পর আনোয়ার উল হক কাকারকে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি কাকারের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পাকিস্তানে বসবাসকারী মালিকের স্ত্রী মুশাল তাঁর স্বামীকে রক্ষা করার জন্য পাকিস্তান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার নেতাদের কাছে ক্রমাগত আবেদন করছেন। প্রচারের জন্য ইয়াসিন মালিকের ১১ বছরের মেয়ে রাজিয়া সুলতানকেও ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত তাঁর বাবার মুক্তির আশা করছেন রাজিয়া সুলতান। রাজিয়া পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের (মুজাফফরাবাদ) পার্লামেন্টে ভাষণও দেন। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করেন রাজিয়া। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করে রাজিয়া বলেন, আমার বাবা ইয়াসির মালিক সারাজীবন কাশ্মীরের জন্য কাজ করেছেন। তিনি কাশ্মীরের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন। আমার বাবার কোনও ক্ষতি হলে তার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে দায়ী করব।
সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় রাজিয়া বলেছিলেন যে কাশ্মীরের জন্য একত্রিত হয়ে তাঁর বাবার মুক্তি দাবি করার সময় এসেছে। তাঁকে ফাঁসি দিলে তা হবে ভারতের কালো দাগ। ইয়াসিন মালিক সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত এবং তাঁর কর্মকাণ্ডকে 'বিরলতম' হিসেবে বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডের দাবিও উঠেছে। ইয়াসিন মালিককে আইপিসি ধারা ১২১ (ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা) এর অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, যার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড।
টেরর মামলায় এনআইএ ইয়াসিন মালিকের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। গত বছরের ২৪ মে এনআইএ আদালত টেরর ফান্ডিং মামলায় ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ইয়াসিন মালিককে ইউএপিএর ধারা ১২১ এবং ধারা ১৭ এর অধীনে ট্রায়াল কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। অর্থাৎ দুটি ভিন্ন মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া পাঁচটি মামলায় মালেককে ১০-১০ বছর এবং তিনটি ভিন্ন মামলায় ৫-৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ইয়াসিন মালিক ১৯৯০ সালে চারজন বিমান বাহিনীর সদস্যকে হত্যার দায়েও দোষী। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের মেয়ে রুবিয়া সইদকেও তিনি অপহরণ করেছিলেন।