চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। শুক্রবার চিন ঘোষণা করল, আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে। চিনের এই সিদ্ধান্ত কিছুক্ষণ পরেই এল, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করেন।
প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত চিনও
চিনের অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, আমেরিকা যদি চিনের স্বার্থে মৌলিকভাবে হস্তক্ষেপ চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে চিনও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৯০ দিনের জন্য শুল্কবৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত চিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করে শুল্ক আরও বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, একই সময়ে আমেরিকা কিছু দেশের জন্য শুল্ক হ্রাস করলেও, চিন এর ব্যতিক্রম।
শুল্কযুদ্ধের পরিণাম মারাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে এবং এর প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও। বিশেষ করে প্রযুক্তি, কৃষিপণ্য এবং ভোক্তা পণ্যের বাজারে সরাসরি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমদানি খরচ বাড়লে সাধারণ মানুষের পণ্য কেনার খরচও বেড়ে যেতে পারে।
চিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চলমান এই বাণিজ্যযুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে। ট্রাম্প আগেও বলে এসেছেন, চিনের সঙ্গে বাণিজ্য আমাদের জন্য ক্ষতিকর। আমরাই সবকিছু হারাচ্ছি। তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলনই এবার আরও বেশি মাত্রায় দেখা যাচ্ছে।
চিনের কড়া হুঁশিয়ারি আমেরিকাকে
চিনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকার এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী এবং চিন তাদের স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সোচ্চার হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তা শুধু দুই দেশের মধ্যে নয়, পুরো বিশ্বের বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিতে পারে। বহু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, যারা আমেরিকা ও চিনের ওপর নির্ভরশীল, তাদের ব্যবসা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে উভয় দেশই কঠোর অবস্থানে আছে। আলোচনার কোনো সূচক দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।