ইউক্রেনে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান হামলার পর কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব দেখালেও, এবার তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। নিউ জার্সির মোরিসটাউন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনের কাজে খুশি নই।’
মিডিয়ার সামনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনকে বহু বছর ধরে চিনি। আমাদের সম্পর্ক ভাল ছিল। কিন্তু এখন ও রকেট ছুড়ছে, শহরের উপর হামলা করছে, মানুষ মেরে ফেলছে। এটা আমার একদমই পছন্দ নয়। আমি জানি না, লোকটার কী হয়েছে। ও কিয়েভ সহ বিভিন্ন শহরে মিসাইল ছুড়ছে। কিছু একটা গোলমাল তো আছে। একদমই ভাল লাগছে না।’
এই হামলাকে ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় এয়ারস্ট্রাইক বলে দাবি করেছে কিয়েভ। রাশিয়া একসঙ্গে ৩৬৭টি ড্রোন ও মিসাইল ছুড়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে। ইউক্রেনের বায়ুসেনার দাবি, তারা ৪৫টি মিসাইল গুলি করে নামিয়েছে এবং ২৬৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। কিন্তু তবুও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বহু শহরে। কিয়েভ-সহ ৩০টিরও বেশি শহর ও গ্রামে ভাঙচুর হয়েছে। অন্তত ১২ জন মারা গিয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক মহলার প্রতিক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘শনিবার বা রবিবার হোক, দুনিয়া ছুটি কাটাতে পারে, কিন্তু যুদ্ধ চলতেই থাকে। একে উপেক্ষা করা যায় না। আমেরিকার নীরবতা এবং দুনিয়ার চুপ করে থাকা পুতিনকে আরও নৃশংস করে তুলছে। যতক্ষণ না রাশিয়ার উপর কড়া চাপ তৈরি করা হবে, ততক্ষণ এই হামলা থামবে না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুদিন আগেই যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই কারণে পুতিনের সঙ্গে তিনি দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কথা বলেন। জেলেনস্কির সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেছিলেন। উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়, কারণ তুরস্কে যে শান্তি আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, সেখানে পুতিন যাননি। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া হামলা জারি রেখেছে।
এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। রাশিয়ার আক্রমণ এবং আমেরিকার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।