
কৃষ্ণসাগরে রুশ ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর উপর ফের ভয়ঙ্কর হামলা। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ দাবি করেছে, তাদের তৈরি বিশেষ সমুদ্র-ড্রোন ‘সি বেবি’ একযোগে রুশ তেল ট্যাঙ্কার ‘ভিরাট’ এবং ‘কাইরোস’–এ আঘাত হেনেছে। দুই জাহাজই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রুশ তেলের পাচারে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার পরপরই রুশ ট্যাঙ্কার ভিরাট–এর ক্রু খোলা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে জরুরি বার্তা পাঠান, 'এটা ভিরাট… সাহায্য চাই… ড্রোন অ্যাটাক… মেডে! মেডে!' এই আর্তনাদই আন্তর্জাতিক মহলে নয়া চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
তুরস্কের পরিবহন মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে, শনিবার সকালেই কৃষ্ণসাগর উপকূল থেকে প্রায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অজ্ঞাত সাবমারসিবল বাহন ভিরাট-কে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। আগুন না লাগলেও জাহাজে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তবে ২০ জন ক্রু সদস্যই নিরাপদ। জাহাজটি ধীরে ধীরে তুরস্কের তটের দিকে এগোচ্ছে।
ঘটনার বিশ্লেষণে উঠে আসছে বৃহত্তর ভূরাজনীতি। কৃষ্ণসাগরে রুশ তেল পরিবহনের মূল ভরসা এই ‘শ্যাডো ফ্লিট’। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়া যে *Flag of Convenience*–এর আওতায় বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ব্যবহার করছে, সেটাই এই আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যএমনই দাবি ইউক্রেনের। এই দুই ট্যাঙ্কারই গাম্বিয়ার পতাকাবাহী ছিল এবং খালি অবস্থায় নবোরোসিস্ক বন্দরে ফিরছিল।
ইউক্রেন জানিয়েছে, হামলায় দুই ট্যাঙ্কারই কার্যত অচল। মাত্র এক দিন আগেও *কাইরোস*-এ বিস্ফোরণের পর ২৫ জন নাবিককে উদ্ধার করতে হয়েছিল। একই সঙ্গে সিপিসি জানিয়েছে, নভোরোসিস্ক এলাকায় ড্রোন আক্রমণে ক্যাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের একটি অয়েল লোডিং বার্থ ধ্বংস হয়ে তেল পরিবহন সাময়িক স্থগিত রয়েছে। এতে সমুদ্রে রাশিয়ার যুদ্ধ-অর্থনীতি দাঁড়িয়ে গেল নতুন সঙ্কটে।
রাশিয়া এখন পর্যন্ত কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তুরস্ক জানিয়েছেহামলা তাদের সামুদ্রিক সীমার বাইরেই ঘটেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই ড্রোন কৌশল কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌপরিবহনের উপর ইউক্রেনের চাপ বাড়াতে পারে, যা যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে সমুদ্রপথেরও সমীকরণ বদলে দেবে।