US Presidential Election 2024: বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে ভোট। গোটা দুনিয়া তাকিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। ৫ নভেম্বর অর্থাত্ মঙ্গলবার ভোট দেবে আমেরিকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া বেশ জটিল। এবারের ভোটে সামনাসামনি টক্কর কমলা হ্যারিস (Kamala Harris) ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)। প্রথম জন আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট। দ্বিতীয় জন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় কয়েকটি পর্যায়ে। প্রথমে পার্টি প্রাইমারিজ ও ও মনোনয়ন, তারপর সাধারণ নির্বাচন ক্যাম্পেন,এরপর ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম।
প্রাথমিক নির্বাচন ও পার্টি মনোনয়ন
প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলির অভ্যন্তরীণ ভোট হয়। সেই ভোটে নির্বাচিত হন দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। ন্যাশনাল কনভেনশনে দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচিত হতেই ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
জেনারেল ইলেকশন ক্যাম্পেন
এরপর ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পদপ্রার্থী, এছাড়া অন্যান্য নির্দল প্রার্থী দেশজুড়ে প্রচার শুরু করেন। তারমধ্যে বিতর্ক সভা ও মিছিল রয়েছে। টিভি-তে প্রার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্ক টেলিকাস্ট করা হয়।
ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীকেই কিন্তু প্রেসিডেন্ট করে দেওয়া হয় না। ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেমের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বাছা হয়। ৫৩৮ জন ইলেক্টর ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট বেছে নেন। এই ক্ষেত্রে ম্যাজিক ফিগার ২৭০। অর্থাত্ প্রেসিডেন্ট হতে গেলে ইলেক্টোরাল কেজ সিস্টেমে ২৭০টি ভোট পেতেই হবে। মার্কিন কংগ্রেসে প্রতিটি স্টেটের যতজন সদস্য, হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ (জনসংখ্যার নিরিখে) ও দুজন সেনেটর ভোট দেন। যেমন আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৪ ও সবচেয়ে ছোট স্টেট ওয়াওমিংয়ে ন্যূনতম ভোট সংখ্যা ৩। এক জন প্রার্থী যে প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নিজের দিকে টানতে পারবেন, সেই প্রদেশের সব ক’টি ভোট তাঁর হয়ে যাবে। যেমন, ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৪ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৫৪ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাঁদের দলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। জনমত সমীক্ষা বলছে, ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে এগিয়ে ট্রাম্প-ই।
চূড়ান্ত পর্যায়ের ভোট
সব ইলেক্টররা ডিসেম্বরে ভোট দেবেন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য। জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখে হবে গণনা। তারপর আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করা হবে। ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে দায়িত্বভার নেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট।
কেন প্রতিবার নভেম্বরেই হয় ভোট
১৮৪০ সালের আগে যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের জন্য কোনো আলাদা দিন নির্ধারিত ছিল না। সেই সময় নির্বাচনের তারিখ রাজ্যগুলি ঠিক করত। এতে একেক অঙ্গরাজ্যে একেক দিন ভোট হত। তবে বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যই ভোট গ্রহণের জন্য নভেম্বর মাসকে বেছে নিত। এতে নানা ধরনের সঙ্কটের সৃষ্টি হত। এই সব ঝামেলা কাটাতে ১৮৪৫ সালে দেশে একটি নির্দিষ্ট দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইন পাস হয়। শুরুর দিকে শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ মেনে চললেও পরে সব ধরনের নির্বাচনেই এই আইনের প্রয়োগ শুরু হয়।