আমেরিকার হোয়াইট হাইসের একটি বিরাট হল। সেখানে পাশাপাশি বসে রয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া আশপাশে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু আধিকারিক। ট্রাম্পের কোলে রয়েছে একটা ল্যান্ডলাইন ফোন। যার রিসিভার রয়েছে নেতানিয়াহুর কাছে। তিনি কথা বলছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। থুড়ি তিনি নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানির কাছে।
আর বর্তমানে এই ছবিই প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাইস। যা দেখে অনেকেই এই ছবিকে ঐতিহাসিক বলে মনে করছেন।
কেন ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু?
আসলে ৯ সেপ্টেম্বর আচমকাই ইজরায়েল আকাশপথে আক্রমণ শাণায় কাতারের রাজধানী দোহায়। সেখানে উপস্থিত হামাসের অফিসে করা হয় আক্রমণ। যার ফলে হামাসের কিছু সদস্যের পাশাপাশি কাতারের অফিশিয়ালও প্রাণ হারায়।
আর এই ঘটনার পর থেকেই তাপমাত্রার পারদ চড়তে থাকে ইজরায়েল এবং কাতারের মধ্যে। শুধু তাই নয়, গাজায় শান্তি প্রক্রিয়াও এই আক্রমণের মাধ্যমে থমকে যায় বলে মনে করেন ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এমন পরিস্থিতিতেই নেতানিয়াহু ক্ষমা চেয়ে নিলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আর এই কাজটা তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে বসে হোয়াইট হাউসেই করলেন। যার ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল।
সূত্রের খবর, ফোনে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার জন্য ক্ষমা চান নেতানিয়াহু। পাশাপাশি আগামিদিনে যে তাঁদের পক্ষ থেকে এমন ভুল হবে না, সেই প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রেখেছেন তিনি।
গাজা পিস প্ল্যানের দিকে আরও একদম
অনেক দিন ধরেই এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চলছে। তারই মাঝে কাতার আক্রমণ করে শান্তির প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে ফেলে ইজরায়েল বলে অভিযোগ। যদিও নিজের সেই ভুল শুধরে নিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেয়ে নিয়েছেন ক্ষমা। এর মাধ্যমেই 'গাজা পিস এগ্রিমেন্ট' বা গাজা শান্তি চুক্তি এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আসলে কাতার চিরকালই হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে মধ্যস্ততা করে এসেছে। তবে নেতানিয়াহুর দেশ আক্রমণ করার পর সেই কাজ থেকে বিরত ছিল আল থানির দেশ। যার ফলে বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছিল ট্রাম্পের স্বপ্নের গাজা পিস প্ল্যান।
যদিও ইজরায়েলের পক্ষ থেকে নেতানিয়াহু ইতিমধ্যেই ক্ষমা চেয়েছেন। ফলে আবার হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে মধ্যস্ততা করতে এগিয়ে আসবে কাতার বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাম্পের এই প্ল্যানকে আপাতত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং সৌদি আরবও সাপোর্ট করবে বলেও আশা করা যায়। যার ফলে গাজা শান্তি চুক্তিও অনেকটাই এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।