AI-এর ফলে চাকরি কমবে না। তবে চাকরির ধরন পাল্টে যাবে। নতুন নতুন কাজের সৃষ্টি হবে। এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার প্যারিসে আয়োজিত AI অ্যাকশন সামিটে অংশ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সম্মেলনের সহ-সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ডেভেলপমেন্ট, নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের কাজ শেখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
AI-এর কারণে কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সেই বিষয়ে মোদী বলেন, 'প্রযুক্তির কারণে কাজ কমে না, তবে তার গতি-প্রকৃতি কিছুটা বদলায়। নতুন ধরনের কর্মসংস্থান তৈরি হয়।' তিনি জানান, AI-চালিত ভবিষ্যতের জন্য সাধারণ মানুষকে তৈরি হতে হবে। তাই এই AI সংক্রান্ত পঠনপাঠনে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী AI-এর 'পক্ষপাতদুষ্ট' ডেটা সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যাঁরা জানেন না, তাঁদের জন্য উল্লেখ্য, AI-এর ডেটা মানেই তা বেদবাক্য, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কোনও কারণে AI কোনও নির্দিষ্ট, পক্ষপাতদুষ্ট উত্তরও দিতে পারে। এই বিষয়টি নিয়েও সতর্কতা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'নিরপেক্ষ, উচ্চ মানের ডেটাসেট তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে এবং মানুষের স্বার্থে অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে হবে।'
AI-এর প্রভাব সম্পর্কে মোদী বলেন, 'AI আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সমাজকে রূপান্তর করছে। এটি মানব সভ্যতার কোড লিখছে। তবে অন্যান্য প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের তুলনায় এটি অনেকটাই আলাদা।' তিনি AI-এর দ্রুত ডেভেলপমেন্ট এবং বিশ্বব্যাপী একত্রে এই বিষয়ে কাজের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।'
AI-এর ইতিবাচক দিক নিয়েও মোদী আলোচনা করেন। তিনি বলেন, 'স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে AI বিপ্লব আনতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করতে পারে।'
সাইবার নিরাপত্তা, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও ডিপফেক-এর ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'AI-এর কারণে সাইবার সিকিউরিটি ও ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আমাদের এই বিষয়ে পর্যাপ্ত সতর্কতায় নজর দিতে হবে।'
এছাড়া AI-এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে মোদী বলেন, 'AI-এর এত বেশি পাওয়ার কনজাম্পশান সত্যিই একটি ভাববার মতো বিষয়। এর জন্য আমাদের কোনও সবুজ শক্তির ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তাই নিয়ে ভাবতে হবে।'
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শেষে ভারতের ডিজিটাল পরিকাঠামোর সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'ভারত ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জন্য স্বল্প ব্যয়ে ওপেন এবং অ্যাক্সেসেবল ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে।' AI-কে মানব কল্যাণের কাজে লাগানো প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।