World Happiness Report 2025: বিশ্ব সুখ প্রতিবেদন ২০২৫-এ ভারতের র্যাঙ্কিং উন্নত হলেও, দেশটি পাকিস্তান এবং ইরানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েলবিয়িং রিসার্চ সেন্টার, গ্যালাপ এবং রাষ্ট্রসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্কের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের অবস্থান ১৪৭টি দেশের মধ্যে ১১৮তম।
পাকিস্তান-ইরানের তুলনায় পিছিয়ে ভারত
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সুখ সূচকে পাকিস্তান (১০৯তম), নেপাল (৯২তম), ইরান (১০০তম), প্যালেস্টাইন (১০৩তম) এবং ইউক্রেন (১০৫তম)-এর তুলনায় ভারত পিছিয়ে আছে। ২০২২-২০২৪ সালের মাথাপিছু আয়, সামাজিক সহায়তা, সুস্থ আয়ু, স্বাধীনতা, উদারতা এবং দুর্নীতির ধারণার মতো বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে এই র্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়েছে।
ভারতের স্কোর সামান্য উন্নতি, কিন্তু এখনও পিছিয়ে
এই বছর ভারতের স্কোর কিছুটা উন্নত হয়ে ৪.৩৮৯ হয়েছে। তবে, দুর্নীতির ধারণা এবং মানুষের মধ্যে উদারতার অভাব র্যাঙ্কিংকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক সহায়তা, স্বচ্ছতা এবং উদারতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী না হলে ভারতের অবস্থান আরও পিছিয়ে পড়তে পারে।
টানা অষ্টমবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড
উত্তর ইউরোপের নর্ডিক দেশ ফিনল্যান্ড টানা অষ্টমবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে শীর্ষস্থানে রয়েছে। তাদের গড় স্কোর ৭.৭৩৬। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব দেশের নাগরিকরা অন্যদের প্রতি দয়া এবং সততার ওপর আস্থা রাখে, তারা বেশি সুখী। উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফিনল্যান্ডের নাগরিকরা মানিব্যাগ হারিয়ে ফেললেও সেটি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী। এর ফলে দেশটিতে সামাজিক আস্থা দৃঢ় হয়েছে, যা নাগরিকদের সুখী রাখে।
ভারতে সুখ বৃদ্ধির জন্য করণীয়
ভারতের সামান্য স্কোর উন্নতি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেও, স্থায়ী সুখ বৃদ্ধির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, দুর্নীতির দমন এবং মানবিকতার বিকাশে জোর দিতে হবে।
গবেষকদের মতামত
গবেষকরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য এবং অর্থ ছাড়াও, সাধারণ বিষয়গুলোও মানুষের সুখে বড় ভূমিকা রাখে। অন্যের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করা, পরিবারের সান্নিধ্য পাওয়া এবং বাড়িতে প্রিয়জনদের উপস্থিতি সুখের মাত্রা বাড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, মেক্সিকো এবং ইউরোপের চার থেকে পাঁচ সদস্যের পরিবারকে সবচেয়ে সুখী বলে বিবেচনা করা হয়েছে।
গ্যালাপের সিইও জন ক্লিফটন বলেছেন, "সুখ শুধু অর্থ বা প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে না; এটি বিশ্বাস, সংযোগ এবং প্রিয়জনদের পাশে থাকার অনুভূতির ওপর নির্ভর করে।" তিনি আরও বলেন, "সুখী সমাজ এবং শক্তিশালী অর্থনীতি গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই মানবিক মূল্যবোধে বিনিয়োগ করতে হবে।"