Advertisement

Economic Crisis in Bangladesh: বাংলাদেশে ধসে যাচ্ছে ব্যাঙ্কিং সেক্টর, দেড় লাখ কোটির বেশি ঘাটতি, পরিস্থিতি ঠিক কী?

প্রতিবেশী বাংলাদেশ বর্তমানে গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। রিপোর্ট অনুসারে, দেশের ব্যাঙ্কগুলি কর্তৃক বিতরণ করা বিপুল পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে না, যার ফলে ব্যাঙ্কগুলি উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও ধসের কিনারায়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেছে।

বিপদের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিপদের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি
Aajtak Bangla
  • ঢাকা,
  • 28 Oct 2025,
  • अपडेटेड 9:48 AM IST

প্রতিবেশী বাংলাদেশ বর্তমানে তীব্র  অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। রিপোর্ট অনুসারে, দেশের ব্যাঙ্কগুলি কর্তৃক বিতরণ করা বিপুল পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে না, যার ফলে ব্যাঙ্কগুলি উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও ধসের কিনারায়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেছে।

রিপোর্ট কী বলছে
রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে আর্থিক অবস্থা উদ্বেগজনকভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে। চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে সমস্যাগ্রস্ত ব্যাঙ্কগুলোর সম্মিলিত মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা তিন মাস আগের তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬১টি ব্যাঙ্কের  মধ্যে ২৪টি ব্যাঙ্ক বাধ্যতামূলক ন্যূনতম মূলধন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। মার্চ প্রান্তিকে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

রিপোর্টে  বলা হয়েছে,  ঋণ খেলাপি, দুর্বল নিয়মকানুন, রাজনৈতিক চাপ, দুর্নীতি এবং অস্থির কোম্পানিগুলির আধিপত্যের কারণে দেশের অর্থনীতি বিপদের মধ্যে রয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB) সম্প্রতি জানিয়েছে যে ঋণ খেলাপির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ মানুষ তাদের নেওয়া ঋণ পরিশোধ করছে না।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ক্রমবর্ধমান খেলাপি এই সংকটের মূল কারণ। খেলাপি ঋণ বাড়লে ব্যাঙ্কগুলোকে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ রাখতে হয়। কিন্তু অনেক ব্যাঙ্ক  প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের মূলধনভিত্তি দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ব্যাঙ্ক  খাতে দীর্ঘদিনের লুকনো অনিয়ম ও দুর্বলতা প্রকাশ্যে আসছে। এর ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ রেকর্ড পর্যায়ে বেড়েছে এবং ব্যাঙ্কগুলোর মূলধন ঘাটতি আরও গভীর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, মূলধন ঘাটতিতে থাকা ২৪টি ব্যাঙ্কের মধ্যে রয়েছে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কও।

সরকারি খাতের বেহাল দশা
বিশেষ করে সরকারি খাতের ব্যাঙ্কগুলো  চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে। ঋণ আদায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে শীর্ষ ২০ জন খেলাপির ঋণ ছিল ৩১,৯০৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ২১৯ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। ব্যাঙ্কিং খাতের সমস্যাগুলি ব্যাঙ্ক  বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকেও প্রভাবিত করছে, যেখানে পরিস্থিতি আরও খারাপ।

Advertisement

বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাঙ্কগুলোর দুর্বল মূলধনভিত্তি শুধু তাদের  ক্ষমতাকেই সীমিত করছে না, বরং বিদেশি ব্যাঙ্কের সঙ্গে লেনদেন ও ব্যবসায়িক আস্থাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বাসেল-৩ কাঠামোর আওতায় এসব ব্যাঙ্ক আন্তর্জাতিক মানের মূলধন পর্যায় বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় বিদেশি অংশীদাররা ঝুঁকি নিতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের ব্যাঙ্কিং খাতের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে  বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হবে। তারপর অর্থনীতিতে গতি ফিরবে—এমনটিই মনে করছে সেদেশের ব্যবসায়ী মহল। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যেন নিশ্বাস নিচ্ছে, কিন্তু হাঁটতে পারছে না। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগে স্থবিরতা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও আস্থাহীনতার ঘূর্ণিতে আটকে গেছে উৎপাদন ও বৃদ্ধির গতি। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হবে না—এমন মত প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ী, নীতিনির্ধারকসহ সবাই। 
 

Read more!
Advertisement
Advertisement