Sheikh Hasina: ঢাকায় জমি দুর্নীতির মামলা, হাসিনা-জয়-পুতুলের বিরুদ্ধে ৩ সাক্ষী কী বললেন?

প্রসঙ্গত ক্ষমতার অপব্যাবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা ৬ মামলার ৩ টিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলার তিন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তাঁরা হলেন—দুদকের সহকারী পরিচালক সালাউদ্দিন, এস এম রাশেদুল হাসান ও আফনান জান্নাত কেয়া। 

গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। ওইদিন অভিযুক্তরা  পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সূত্রের খবর, সাক্ষীরা বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালীন প্রাক্তন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে অন্য আসামিরা সহযোগিতা করেছে। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৬ অগাস্টের দিন ধার্য করা হয়েছে। 

গত ৩১ জুলাই পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গঠন করেন আদালত। এর মধ্যে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন আসামি শেখ হাসিনা পরিবারের তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ অগাস্ট এবং ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামি শেখ রেহেনা পরিবারের তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ গাস্ট দিন ধার্য করেন।  এসব মামলার অন্য আসামিরা হলেন—শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলে-মেয়ে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ করা  হয়েছে। এরমধ্যে শেখ হাসিনা ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০০৯) বরাদ্দ পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ অগাস্ট তাঁর নামে রাজউক প্লটের বরাদ্দপত্র দেয়। সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫) এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও (প্লট নম্বর ০১৭) ১০ কাঠা করে প্লট পেয়েছেন। জয়ের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর দেওয়া হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় ওই বছরের ২ নভেম্বর। শেখ রেহানাও ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০১৩) বরাদ্দ পেয়েছেন। তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১১) এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১৯) নামেও একই পরিমাণের প্লট বরাদ্দ হয়েছে। পরে চলতি বছরের গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারার অভিযোগ আনা হয়।