
একটি মৃত্যু। আর তাতেই জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যে হিংসা শুরু হয়েছিল, তার পর থেকে শান্তিতে নেই ভারতের তৈরি করা এই প্রতিবেশী দেশটি। এই মুহূর্তে গোটা বাংলাদেশজুড়ে কট্টরপন্থী মুসলিমদের তাণ্ডব চলছে। ইতিমধ্যেই বহু সরকারি অফিস, বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, এই দুই জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে আগুন দিয়েছে উন্মত্ত বিক্ষোভকারীরা। ওসমান হাদি নামে তথাকথিত এক ছাত্রনেতার মৃত্যু ঘিরেই যাবতীয় হিংসা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হাসিনা সরকারের পতনের জন্য নোংরামি ও হিংসা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে, সেই হিংসার অন্যতম পাণ্ডা ছিল এই হাদি। কট্টরপন্থী ও আপাদমস্তক ভারত বিরোধী। আওয়ামী লিগকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিল। পাশাপাশি তার নিশানায় থাকত বিএনপি বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি। আর সেই হাদিরই ঢাকার ৮ কেন্দ্র থেকে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নির্বাচন লড়ার কথা ছিল। গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপও তৈরি করেছিল। সেই মানচিত্রে ভারতের কিছু অংশকে বাংলাদেশের বলে দেখান হয়। আর সেই ম্যাপ সে ছড়িয়ে দিচ্ছিল অনুগামীদের মধ্যে।
১২ ডিসেম্বর ই-রিকশাতে চেপে যাচ্ছিল হাদি। এই সময়ই তাকে এক দুষ্কৃতী গুলি করে বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এভারকেয়ার হসপিটালে। কিন্তু সেখানেও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। এরপর তাকে গত শনিবার সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হল না। হাদির মৃত্যুর পরেই কট্টরপন্থীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। বৃহস্পতিবার গোটা রাত বাংলাদেশজুড়ে হিংসা চলেছে। শুক্রবারও তা চলছে। এনসিপি-র নেতা নাহিদ ইসলাম বলছেন, বাংলাদেশে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশে সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র ছায়ানট ভাঙচুর করে দিয়েছে কট্টরপন্থীরা। আল্লা হু আকবর স্লোগান দিয়ে তারা জ্বালিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের একের পর এক ঐতিহ্যশালী ভবন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে হাদিকে শহিদ ঘোষণা করেছেন। আজ বাংলাদেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রতিটি খবর সবার আগে পেতে রইল LIVE আপডেট।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত, হিন্দু ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার পর এমনই দাবি তুললেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রা।
শুক্রবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, বাংলাদেশে ধর্মনিন্দার অভিযোগে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা এবং পরে তাঁর দেহে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও বিচলিত করার মতো। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানান, যাতে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরালোভাবে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক এই ঘটনায় বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার আরও একটি দৃষ্টান্ত সামনে এসেছে। অভিযোগ, ধর্মনিন্দার অভিযোগ তুলে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পরে তাঁর দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘিরে আন্তর্জাতিক স্তরেও উদ্বেগ বাড়ছে।
বর্ডার এলাকায় পরিদর্শন করলেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল। BSF কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন তিনি।
শুক্রবার বাংলাদেশ জুড়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক একাধিক ‘ভয়াবহ চরমপন্থী’ হিংসাত্মক ঘটনার তীব্র নিন্দা শীর্ষ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের।
ফ্রান্সের মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস মেকার্স বাংলাদেশ ইন ফ্রান্স (JMBF) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেই একাধিক জায়গায় সমন্বিত হামলার ঘটনাতেই প্রমাণ হয় যে, বাংলাদেশ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ডুবে গিয়েছে এবং রাষ্ট্র হিসেবে তার মৌলিক দায়িত্ব পালনে মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
'যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত ত্রিপুরা সরকার,' শুক্রবার এমনই জানালেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
শুক্রবার বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে উত্তেজনা ছড়ায়। ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পরেই একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ ও হিংসার ঘটনা ঘটে। এর জেরে গোটা দেশে চাপা উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে।
এহেন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, 'কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল, তা আমরা সকলেই জানি। শেখ হাসিনার অপসারণের পর বাংলাদেশের জেল থেকে মৌলবাদী, অপরাধী ও চোরেরা মুক্ত হয়ে যায়। আমরা যেটা আশঙ্কা করেছিলাম, প্রতিবেশী দেশে এখন ঠিক সেটাই ঘটছে।'
বিক্ষোভকারীদের সহিংস আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বার্তা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।
বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে শহরে পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত থানাকে সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ। সামনে বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ। তার আগে কঠোর পুলিশি নজরদারি এবং টহল অব্যাহত থাকবে। এ কথা জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
বাংলাদেশের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, কলকাতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সমস্ত থানাকে নির্দেশ মনোজ ভার্মার।
দক্ষিণ ত্রিপুরার বেলোনিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখলেন ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট।
২০ ডিসেম্বর শনিবার যোহরের নমাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৯ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬:০৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছায় তাঁর দেহ।
বিবিসি সূত্রে খবর, ওসমান হাদির অন্তিম যাত্রার সময় পরিবর্তন হয়ে বেলা দু'টোয় হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়। এদিকে ভারতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করলেন পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড প্রধান জিওসি-ইন-চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরসি তিওয়ারি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বেলোনিয়া সীমান্ত ফাঁড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাও ছিলেন।
নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির দেহ শনিবার বেলা আড়াইটেয় বাংলাদেশের সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নিয়ে যাওয়া হবে। বিবিসি সূত্রে খবর, সন্ধেয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আমরা যথাসম্ভব দ্রুত প্রথম আলোর অনলাইন কার্যক্রম শুরু করব। আগামীকাল থেকে যথারীতি পত্রিকাও প্রকাশিত হবে। আমরা সব সময়ের মতো প্রথম আলোর পাঠকদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদমাধ্যমটির তরফে শুক্রবার সন্ধেয় একথা জানানো হয়েছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ১৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর অফিসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত হামলা চালানো হয়। ভাঙচুরের পর ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হলে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েন এবং প্রাণ বাঁচাতে কার্যালয় ছাড়তে বাধ্য হন। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ভবনের গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সম্পদ ভস্মীভূত হয়। এই হামলার ফলে প্রথম আলোর ২৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ছাপা ও অনলাইন প্রকাশ বন্ধ রাখতে হয়। এই ঘটনাকে গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আক্রমণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের দাবি করেছে, শাহবাগে তাঁর সম্মানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হোক। বাংলাদেশের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ব্যবহার করে ছায়ানট ভবনে হামলা এবং লুটপাটের সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তিকে শনাক্ত করছে কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ অশান্তি। প্রথম আলো-সহ একাধিক সংবাদপত্রের অফিসে অগ্নিসংযোগ হয়েছে, মধ্যরাতে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িও। এই পরিস্থিতিতে কড়া নজর রাখছে দিল্লি। অশান্তির আঁচ যাতে পশ্চিমবঙ্গে না লাগে, সে জন্য সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিএসএফ। বিশেষ করে ‘চিকেনস নেক’ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। থার্মাল ও নাইটভিশন ক্যামেরা, সিসিটিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে চলছে টানা নজরদারি।
ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছল ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ। বিবিসি জানাচ্ছে, মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে ঢাকায়। আজ সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুরে থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি দেশে পৌঁছয়। গত ১২ই ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর পানিট্যাঙ্কি এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নেওয়া হয় তাকে। এরপর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনদিন চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চার পীঠাস্থান ঢাকার ছায়ানট ভবনে ভাঙচুর ও তাণ্ডবের ঘটনায় মুখ খুলল ইউনূস সরকার। বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রকের উপদেষ্টা মুস্তাফা সারওয়ার ফারুকি জানালেন, যারা ছায়ানট ভবনে হামলা চালিয়েছে, ভাঙচুর করেছে,কাউকে রেয়াত করা হবে না। প্রত্যেককে আইন মেনে সাজা দেওয়া হবে। আজ অর্থাত্ শুক্রবার ছায়ানট ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে কট্টরপন্থীরা।
বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা আসলে 'নির্বাচন ঠেকানোর অপচেষ্টা' বলে দাবি করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের বিভিন্ন স্থানে মব তৈরি করে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র বলে বিবিসি বাংলাকে জানান।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগে চলছে সমাবেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ সহ আশেপাশের মসজিদগুলো থেকে ছোটো ছোটো মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশে জমা হচ্ছে।
অশান্ত বাংলাদেশে উঠেছে 'হাদি-হাদি' স্লোগান। জামাত ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা জনগণ এবং ভারতের বিরোধী মন্তব্য চালিয়ে যাচ্ছে। জামাত ইসলামী এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা উস্কানিমূলক স্লোগান দিচ্ছে। "হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে না," "তুমি কে, তুমি কে - হাদি হাদি, আমি কে, আমি কে - হাদি হাদি।" উঠছে, "লীগকে ধরো, জেল ভরো" স্লোগানও।
আজ রাতেই সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে ওসমান হাদির দেহ। হাদির মৃত্যু ঘিরে এমনিতেই জ্বলছে বাংলাদেশ। আজ রাতে এই হিংসা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
'ইনকালাব মঞ্চ'-এর ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এবার ভারত বাংলাদেশ বেনাপোল সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ল বিক্ষোভ। প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ।
রাতভর তাণ্ডব নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদকর্মীদের উপর হামলাকে ন্যক্কারজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। ইউনূসের কথায়, ‘এই হামলা আমাকে গভীর ভাবে ব্যথিত করেছে। এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’ পাশাপাশি নতুন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনও স্থান নেই বলেও জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে চলতে থাকা অশান্তির মধ্যে সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলার ঘটনার পর শুক্রবার সকালে দ্য ডেইলি স্টার–এর দফতরে এসে অনেক সাংবাদিক ও কর্মী আবেগে ভেঙে পড়েন। ঢাকার কারওয়ান বাজারে ঘটে যাওয়া ঘটনাটিকে সবচেয়ে গুরুতর হামলাগুলির মধ্যে একটি বলে ধরা হচ্ছে। সেখানে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এবং বাংলা দৈনিক প্রথম আলো–র অফিস লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। দ্য ডেইলি স্টারের ফটোজার্নালিস্ট প্রবীর দাস নিজের প্রিয় কর্মস্থলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শুক্রবার সকালে তাঁর হাতে ক্যামেরা বা লেন্স ছিল না। বরং, সেই মুহূর্তে সহকর্মীরা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার সময় অন্যরা তাঁরই ছবি তুলছিল। প্রবীর দাস বলেন, “আমার স্মৃতি, এত বছর ধরে তোলা ছবিগুলি, চার-পাঁচটা হার্ড ড্রাইভে রাখা ছিল। মনে হচ্ছে সব নষ্ট হয়ে গেছে। যাঁরা আগুন লাগিয়েছে, তারা হয়তো বুঝবে না, একজন সাংবাদিকের কাছে এসব জিনিসের মূল্য কতটা।”
বাংলাদেশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের পর, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশে অশান্তি নিয়ে কড়া পোস্ট করলেন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। লিখলেন, 'এক জিহাদির মৃত্যুতে, হাজার হাজার জিহাদি বাংলাদেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে। হাতের সামনে যা পারছে, ভাঙছে, সব কিছুতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সব পুড়ে ছাই করে দিচ্ছে।'
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় ডেইলি স্টারের অফিসে ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারী জনতা। কমপক্ষে ২৮ জন সাংবাদিককে বিল্ডিংয়ের ১০ তলায় আটকে রেখেই গ্রাউন্ড ফ্লোরে আগুন লাগিয়ে মৃত্যুর উল্লাস নৃত্য করল বাংলাদেশের হিংসাত্মক জনতা। পরে দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে এসে দমকলের সিঁড়ি ব্যবহার করে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে।
শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ নম্বর ধানমণ্ডির বাড়িটিতে অতীতের ভাঙচুরের পর খুব সামান্য অংশই অবশিষ্ট ছিল। হাদির মৃত্যুর জেরে হিংসাত্মক আন্দোলনে সেটুকু অংশও ভেঙে দিল কট্টরপন্থীরা। বিবিসি সূত্রের খবর, বেলা ১২ নাগাদ শাবল, হাতুড়ি নিয়ে ৩২ নম্বর ধানমণ্ডির বাড়ির দেওয়াল ভাঙতে দেখা যায় বেশ কিছু মানুষকে। ভাঙার কাজে অংশ নেওয়া একজন জানায়, ওসমান হাদির হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা থামবেন না। একই সঙ্গে ওই উগ্রপন্থীরা স্লোগান দিতে থাকে, যারাই আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলবে তাদের টিকতে দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করছেন। সরকার জুলাইয়ের বিক্ষোভে জড়িত নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক ডেকেছে।
জ্বলন্ত বাংলাদেশে রেহাই পায়নি সংবাধ্যমের অফিস। আগুন ধরিয়ে ছাড়খার করে দেওয়া হয়েছে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ভবন। এরইমধ্যে খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, তিনি ‘বর্তমান সময়’ নামের একটি নিউজ পোর্টাল চালাতেন এবং ডুমুরিয়ারর শলুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
অশান্ত বাংলাদেশে 'প্রথম আলো' ও 'ডেইলি স্টার',দুই সংবাদমাধ্যমের অফিস ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আপাতত দুই সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষই জানিয়েছে, সাময়িক ভাবে তাদের সব সংস্করণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কবে খুলবে, তা এখনও জানানো হয়নি। প্রথম আলো পাঠকদের উদ্দেশ্যে বার্তায় জানিয়েছে, ' যতটা দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত কারিগরি ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করে প্রথম আলোর অনলাইন ও পত্রিকার প্রকাশ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পাঠকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।'
ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি (NCP)-র নেতা নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধের আখ্যা দিলেন। তাঁর দাবি, সব অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট দলকে একজোট হতে হবে। নাহিদ ইসলামের কথায়, 'আমরা শরিফ ওসমান হাদিকে আলিঙ্গন করছি। হাদির অসমাপ্ত বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ভারত সহ বিদেশি আগ্রাসন থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে এটাই দরকার। আমরা সব দলের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব।'
প্রথম আলোর ক্ষতিগ্রস্ত বিল্ডিং পরিদর্শন করলেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল বাহারুল আলম। ১৯ ডিসেম্বর তিনি বিল্ডিং পরিদর্শনের পর ঘটনার বিবরণ স্থানীয় পুলিশ অফিসারদের থেকে নেন। যদিও সাংবাদিকদের করা কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি বাহারুল।
চট্টগ্রামে ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারের বাসভবনে হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ১২ জনকে।
ঢাকায় শাহবাগ চত্বরে রাস্তা আটকে চলছে বিক্ষোভ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানাচ্ছে, আজ সকাল ১০টায় প্রায় শ’দুয়েক বিক্ষোভকারীকে দেখা যায়। তবে তারা কোনও দল বা প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে ছিলেন না। বিক্ষোভকারীদের স্লোগান, 'তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি', 'এই মুহূ্র্তে দরকার, বিপ্লবী সরকার'।
চরমপন্থী নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ। চলছে ভাঙচুর, লুটপাট। সেই সঙ্গে আগুন লাগানো হয়েছে একাধিক জায়গায়। আর এমন পরিস্থিতিতে ইউনূস সরকারের দিকে আঙুল তুলছে বাংলাদেশ আওয়ামী লিগ। বিশদে জানতে ক্লিক করুন।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বাংলাদেশ ইস্যুতে বললেন, আমরা ৮০-র দশক থেকে বলে আসছি, বিনা যুদ্ধে ভারত দখলের চক্রান্ত চলছে বাংলাদেশে। কট্টরপন্থা আসলে একটি ক্যান্সার। কট্টরপন্থা আরও বাড়বে।গোটা ইউরোপ চাপের কাছে মাথা নত করেছে। বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের উপর আক্রমণ চলছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল জাহাঙ্গির আলম উচ্চপর্যায়ের মিটিং ডাকলেন। ঢাকা সহ গোটা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে ওই মিটিংয়ে। ঢাকার বর্তমান পরিস্থিতি শোচনীয়। পুলিশ ও সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। জাহাঙ্গির আলমের ডাকা মিটিংয়ে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। থাকবেন জুলাই হিংসা আন্দোলনের নেতারাও। ইতিমধ্যেই ঢাকায় শাহবাগে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের ইসলামিক কট্টরপন্থী ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে ঢাকা জুড়ে কট্টরপন্থীদের তাণ্ডব চলছে। একের পর এক বাড়ি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ অর্থাত্ শুক্রবার সকালে ঢাকার কী পরিস্থিতি, দেখুন।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ ধানমন্ডিতে ছায়ানটের ভবনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, যে যা পেরেছেন ভেঙেছেন। লাঠি দিয়ে ভাঙা হয়েছে দরজা, জানলা। অগ্নিসংযোগ করা হয় একাধিক জায়গায়। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সঞ্জিদা খাতুনের ছবি ছিঁড়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ছেঁড়া হয়েছে লালনের ছবিও।
সারারাত ধরে চলে আগুন নেভানোর কাজ। শুক্রবার সকালেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি 'প্রথম আলো' বা 'দ্য ডেইলি স্টার'-এর অফিসে। দমকলের কর্মীরা এখনও রয়েছেন দুই অফিসের সামনেই। একাধিক ভিডিও এসেছে প্রকাশ্যে।
হিন্দু অত্যাচার চলছিলই ইউনূসের বাংলাদেশে। হাদির মৃত্যুর জেরে হিংসায় ফের নিশানায় সংখ্যালঘু হিন্দুরাই। সংবাদমাধ্য বিবিসি সূত্রের খবর, ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে উগ্রপন্থীরা। শুধু তাই নয়, গাছে ঝুলিয়ে দেহে আগুনও ধরিয়ে দেয় তারা।
বাংলাদেশের রাজশাহীতে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত। এই আবহে রাজশাহীর একটি স্থানীয় আওয়ামী লিগ অফিসে বুলডোজার চালানো হল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শুক্রবার ভোররাত প্রায় ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ (ভারতীয় সময়) বিক্ষোভকারীরা একটি বুলডোজার নিয়ে আওয়ামী লিগের কুমারপাড়া অফিসে আসে এবং ভবনটি ভাঙচুর শুরু করে।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার-এর অফিসেও চলেছে ভাঙচুর। আজ বন্ধ রাখা হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই সংবাদমাধ্যমের অফিস।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে হাদিকে শহিদ ঘোষণা করেছেন। আজ বাংলাদেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।
আবারও ভাঙচুর চলছে ধানমণ্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের পৈতৃক বাড়ির অবশিষ্ট অংশে। বিবিসি জানিয়েছে, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর আসার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে মুজিবের ওই বাড়িতে গত ৫ অগাস্টের পর দুই দফায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ফলে সেটি একরকম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেখানেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ভাঙার কাজে এক্সক্যাভেটর ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে।
হাদির মৃত্যু ঘিরে হিংসার কবলে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমও। উগ্রপন্থীরা আগুন জ্বালিয়ে দিল বাংলাদেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের অফিস। আজ দুটি সংবাদমাধ্যমই সংবাদপত্র প্রকাশ করতে পারেনি। বন্ধ রাখা হয়েছে তাদের ওয়েবসাইটও।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা জুলাই আন্দোলনের সময় থেকে উত্থান চরমপন্থী নেতা হাদির। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন। পাশাপাশি ভারত বিরোধীতার জন্যও তিনি পরিচিত ছিলেন। ঢাকা ৮ কেন্দ্র থেকে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নির্বাচন লড়ার কথা ছিল তার। হাদির সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন এখানে।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাদির। গত ১২ ডিসেম্বর থেকে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। ঢাকায় বিজয়নগর এলাকায় বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে তাকে গুলি করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। এরপর তাকে এয়ারলিফ্ট করে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।