Advertisement

Lata Mangeshkar Sang For Bangladesh: মুক্তিযুদ্ধে ‘ও দাদাভাই’ গাইলেন লতা, বাংলাদেশে আজও জনপ্রিয়

মেলোডির রানি লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষেরও গভীর সম্পর্ক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময় বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করে বাঙালি রিফিউজিদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করেছিলেন এই কিংবদন্তী শিল্পী।

 বাংলাদেশের সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক লতার বাংলাদেশের সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক লতার
সুমনা সরকার
  • ঢাকা,
  • 07 Feb 2022,
  • अपडेटेड 3:01 PM IST
  • রুনা লায়লাকে জন্মদিনে উপহার থেকে মুক্তিযুদ্ধের যোগ
  • বাংলাদেশের সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক লতার
  • লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে শোকাহত ওপার বাংলাও

রবিবার ঠিক সরস্বতী পুজোর পরের দিনই  শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে়ন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। ৯২ বছর বয়সে তাঁর বিদায়ে শোকাতুর প্রতিবেশী বাংলাদেশও।  সংখ্যায় অল্প হলেও বাংলাদেশের কয়েকজন শিল্পী সুরের সম্রাজ্ঞীর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম রুনা লায়লা। ২০১৬ সালে মুম্বাইয়ে দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ডের বিচারক হিসেবে এক সংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন রুনা লায়লা। রুনা ভারতে এসেছেন শুনেই তাঁকে নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। কিংবদন্তী গায়িকার মৃত্যুর খবর পেয়ে  ফেসবুকে  স্মৃতিচারণ করেছেন রুনা লায়লা।  ফেসবুকে রুনা লেখেন: "যে কণ্ঠটি আমার মতো লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন তিনি এখন স্বর্গের পরীদের জন্য গান গাইছেন। বছরের পর বছর ধরে আমরা ভালোবাসা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেছি….তার অনুমতি নিয়ে আমি তাকে কৌতুক পাঠাতেও সাহস করেছিলাম, যা তিনি খুবই উপভোগ করেছিল।  দিদির খুব ভালো সেন্স অব হিউমার ছিল। তিনি নিজের কিছু মজার অভিজ্ঞতা আমাকে বলেছেন, আমরা একসঙ্গে হেসেছি।"

 

আরও পড়ুন

রুনা লায়লা আরও লিখেছেন, "তার কথা শুনতে খুব ভালোবাসতাম আমি। তার মধুঝরা কণ্ঠস্বরই আমার কাছে সংগীত ছিল। আমি যখন তাকে শুভ সকাল জানাতাম, সেটার বিপরীতে তিনি আমাকে তার প্রিয় ছবি, গান, ফুল, বাচ্চাদের ছবি-ভিডিও পাঠাতেন।  আমার প্রত্যেক জন্মদিনে তিনি শাড়ি পাঠাতেন।  এই বছর তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি যেহেতু লন্ডন যাচ্ছো, সেখান থেকে ঢাকায় ফিরলে তোমার উপহার পাঠিয়ে দেব’।  দিদি, আপনিই আমার কাছে সর্বোচ্চ উপহার।"  আদরের বোন রুনাকে প্রত্যেক জন্মদিনে উপহার পাঠাতেন লতাদিদি।

 

 

ভারতের কিংবদন্তী গায়িকাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন বাংলাদেশের আরেক প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনও। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। সেই উৎসবের ফাঁকে একটি পার্টিতে লতা মঙ্গেশকরের সামনে গাওয়ার সুযোগ হয়েছিল সাবিনা ইয়াসমিনের, যা তাঁর ‘জীবনের বড় পাওয়া’ হিসেবে মনে করছেন শিল্পী।

Advertisement

বাংলাদেশের আরেক শিল্পী আলিফ আলাউদ্দিনও লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে স্মৃতি মেদুর হয়ে পড়েছেন।  বাবা  সুরকার ও সঙ্গীত  পরিচালক আলাউদ্দিন আলী এবং সঙ্গীতশিল্পী মা সালমা সুলতানার সঙ্গে কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে মাত্র ৯ বছর বয়সে জীবনের এই সেরা মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন আলিফ। আলিফ আলাউদ্দিন লতার একটি ছবি  ফেসবুকে পোস্ট করেন, যেখানে তিনি কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পীর কোলে বসে আছেন। 

লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের  রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।  মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে গিয়ে  বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করেছিলেন  লতা মঙ্গেশকর। সে ঘটনা নিয়ে লতা মঙ্গেশকর ট্যুইটারেও একটি বার্তা প্রকাশ করেছিলেন। সে বার্তায় তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গিয়ে সঙ্গীত  পরিবেশনের স্মৃতিচারণা করেছিলেন।

লতা মঙ্গেশকর ট্যুইটটি করেছিলেন ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। ট্যুইটারে লতা মঙ্গেশকর ১৯৭১ সালে অজন্তা শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বিখ্যাত অভিনেতা সুনীল দত্তের গ্রুপের সঙ্গে এসেছিলেন। লতা  লিখেছিলেন, ‘নমস্কার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হতেই আমি সুনীল দত্তের গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ গিয়ে অনেক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলাম। সে সময়ে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজে করে সব জায়গায় গিয়েছিলাম।’

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্য
মেলোডির রানি লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষেরও গভীর সম্পর্ক।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময় বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করে বাঙালি রিফিউজিদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করেছিলেন এই কিংবদন্তী শিল্পী। বিখ্যাত অভিনেতা সুনীল দত্তসহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্লেনে করে বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করতে যেতেন তারা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য সেই সময় ভারতীয় শিল্পীরা এগিয়ে এসেছিলেন। তখন  লতা মঙ্গেশকর ছাড়াও আশা ভোঁসলে, কিশোর কুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মোহাম্মদ রফি, মান্না দে, সলিল চৌধুরী প্রমুখ বাংলাদেশের জন্য সঙ্গীত পরিবেশন করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপনেও অর্থ সাহায্য করেছিলেন তারা। 

 

 বাংলাদেশের সিনেমায় গান
লতা মঙ্গেশকর পরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রেও গানও গেয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে মমতাজ আলী ‘রক্তাক্ত বাংলা’ নামে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। সেই চলচ্চিত্রে সলিল চৌধুরীর সুরে ‘ও দাদাভাই’—জনপ্রিয় এই গান গেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। এটিই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গাওয়া লতা মঙ্গেশকরের একমাত্র গান।

Read more!
Advertisement
Advertisement