শরীরে থাবা বসিয়েছিল মারণ ক্যান্সার। তবুও তিনি লড়ে গিয়েছেন। কথা হচ্ছে হিনা খানকে নিয়ে। এটা কোনও রিল লাইফের গল্প না। একেবারে রিয়েল লাইফের কঠিন বাস্তবের গল্প। কখনও কষ্ট বুঝতে দেননি তিনি। মুখের হাসিও কখনও অমিল হতে দেখেননি কাছের মানুষেরা। উল্টে দাঁতে দাঁত চেপে আরও কঠিন লড়াই করে গিয়েছেন হিনা। চিকিৎসা মাঝেও শ্যুটিং ফ্লোর কিংবা মঞ্চেও দেখা গিয়েছে হিনাকে। চিকিৎসার কারণে এবং স্বাস্থ্যের যত্নে বেশির ভাগ সময় কাটছে হিনা খানের। অভিনেত্রীর অনুগামীরা অপেক্ষায় ছিলেন তাঁকে ফের কবে পর্দায় দেখা যাবে। কিছুদিন আগেই সুখবর দিয়েছেন। দীর্ঘ বিরতির পর, ছোটপর্দায় কামব্যাক করছেন নায়িকা।
সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন সাহসী মেয়ে হিনা। জীবনে বাঁধা বিপত্তি অনেক। কিন্তু পাশে রয়েছে পরিবার ও কাছের কয়েকজন বন্ধু। যারা সর্বক্ষণ সাহস জুগিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে। সেই বন্ধু তালিকায় সবার আগে যার নাম আসে তিনি রকি জয়সওয়াল। নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে কখনও লুকোছাপা করেননি দু'জনের কেউই। বরং নেটাগরিকরা সাক্ষী থেকেছেন তাঁদের বিভিন্ন মিষ্টি মুহূর্তের। হিনার এই জার্নিতে তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে পাশে রয়েছেন রকি। কাছের মানুষটিকে সাহস যোগাতে, হিনার কেমো চলাকালীন নিজেও ন্যাড়া হয়েছিলেন।
একগুচ্ছ মন ছুঁয়ে যাওয়া মুহূর্ত সোশ্যাল পেজে শেয়ার করেছেন হিনা খান। নায়িকা আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, "আমার পরিচিত সেরা মানুষের জন্য! আমি যখন ন্যাড়া হয়েছিলাম, আমার জন্য সেও মাথা কামিয়েছিল। আমার চুল যখন উঠতে শুরু করল, ও তখন আবার নিজের চুল বড় করা শুরু করল। যে মানুষটি আমার আত্মার দেখাশোনা করে, সেই মানুষটি সব সময় বলে 'আমি তোমায় পেয়েছি', হাল ছেড়ে দেওয়ার শত কারণ থাকলেও, যে সবসময় আমার পাশে থাকে.. এই নিঃস্বার্থ মানুষটি যে শুধু ধরে রাখতে জানে। খারাপ- ভাল- বিভিন্ন কঠিন সময়ে আমরা একে অপরের সঙ্গে ছিলাম। আক্ষরিক অর্থে আমরা যেন সারাজীবন একসঙ্গে কাটিয়েছি এবং একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি।"
হিনা আরও লেখেন, "অতিমারী চলাকালীন কঠিন চ্যালেঞ্জ হোক, কিংবা যখন আমরা দু'জনেই আমাদের বাবাকে হারালাম সেই সময়...দু'জনেই খুব কেঁদেছিলাম, একে অপরকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম। অতিমারীর সময় ও কোভিডে আক্রান্ত হয়নি। তা সত্ত্বেও ৩টি মাস্ক পরেও আমার যত্ন নিয়েছে। আমার এই ক্যান্সারের জার্নিতেও সব কিছু ছেড়ে আমার দেখাশোনা করছে...যেদিন থেকে আমার কেমো শুরু হল, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত যখন আমি আমার রেডিয়েশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, ও আমার পথপ্রদর্শক আলো। আমায় পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে, আমায় সাজানো, সও সবই করেছে.. আমার চারপাশে দুর্ভেদ্য সুরক্ষার বলয় তৈরি করেছে। এই যাত্রা, বিশেষ করে গত দু'মাস আমায় অনেক কিছু শিখিয়েছে এবং আমি আরও বেশি করে বুঝতে পেরেছি রকি...তুমি আমার জীবনের সেরা জিনিস। আমি তোমায় ভালোবাসি... তুমি সত্যিই ঈশ্বরের আশীর্বাদ...। এরকম একজন পুরুষের আশীর্বাদ প্রতিটি নারীর জীবনে থাকুক।"
প্রসঙ্গত, রকি ও হিনার সম্পর্ক বহু বছরের। রকি পেশায় একজন প্রযোজক ও পরিচালক। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা বিপুল। অন্যদিকে টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ হিনা খান। 'ইয়ে রিস্তা কেয়া কেহেলাতা হ্যায়', 'কসৌটি জিন্দেগী কী ২' - দর্শকদের মন জেতা ছাড়াও 'বিগ বস' ১১ ও ১৪ -তেও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। হিনা, শো-এ বিজয়ী হননি, কিন্তু 'বিগ বস'-র কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ বাড়ে। টেলিভিশন শো ছাড়াও, তিনি ওয়েব শো এবং ছবিতে কাজ করেছেন। এছাড়াও অনেক মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে সকলের মন বারবার জয় করেছেন অভিনেত্রী।