ইদে (Eid) বলিউড সুপারস্টার সলমন খান (Salman Khan) ভক্তদের বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন। ভারতের চাঁদ রাতে অর্থাৎ ২১ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে 'কিসি কা ভাই কিসি কি জান' (Kisi Ka Bhai Kisi Ki Jaan)। অ্যাকশনে ভরপুর- আলোচিত এই ছবিটি সত্যিই কি দর্শকদের মন ভরাতে পারছে? জানুন কোন ফ্যাক্টরগুলির জন্য দেখবেন ছবিটি এবং কোন কারণগুলির জন্য ছবি ফ্লপ হতে পারে।
'কিসি কা ভাই কিসি কি জান' পরিচালনা করেছেন ফারহাদ সামজি (Farhad Samji)। এর আগে 'হাউসফুল ৪', 'হাউজফুল ৫ ', 'হেরা ফেরি ৩'-র মতো ছবিগুলি পরিচালনা করেছেন তিনি। দক্ষিণের জনপ্রিয় ছবি 'ভিরাম'-র অফিসিয়াল রিমেকে তৈরি করার পর, ফারহাদের কাজ গড়ের চেয়ে কম বলে মনে করা হচ্ছে। গোটা ছবিটি দেখার সময়, এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, একজন পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি একজন সুপারস্টারের জন্যে ছাপিয়ে গেছে। গল্পের দিক থেকে ছবিটি খুবই দুর্বল। চিত্রনাট্য এতই হালকা যে, দক্ষিণ ও উত্তরের জুগলবন্দী, গ্র্যান্ড সেট এবং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দুই বড় সুপারস্টারও তা বাঁচাতে পারছে না। ছবিটি শুধুমাত্র 'লার্জার দ্যান লাইফ' ফ্লেবারেই সীমাবদ্ধ থাকে।
দুর্বল চিত্রনাট্য সমস্ত প্রচেষ্টাকে নষ্ট করছে
সংলাপ এবং আবেগ এতটাই অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহৃত যে, দর্শক ছবি দেখে কখনও হাসেন এবং কখনও বিরক্ত হন। কোন দর্শক কীভাবে গ্রহণ করবেন সেটা তাদের উপর। তবে দুর্দান্ত প্যাকেজিং সহ পরিবেশিত ছবিটি বড় পর্দায় অনেকটাই হতাশ করে। মজার ব্যাপার হল, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় দক্ষিণের সঙ্গে বলিউডের টক্করের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই ছবির দুর্বল চিত্রনাট্য সেই চেষ্টাকে ভেস্তে দিয়েছে।
ফারহাদের তাঁর নির্দেশনা সম্পর্কে আরও অনেক হোমওয়ার্ক প্রয়োজন। প্রথমার্ধে, বলিউডের স্বাদ পাওয়া গেলেও, বিরতির পরে দ্বিতীয় ভাগে দক্ষিণী ছবির স্বাদ মেলে কিছুটা। ক্লাইম্যাক্সে এই দু'রকম ফ্লেবার মিলিয়ে গল্প শেষ হয়।
সলমন -পূজার জুটি
প্রথম থেকেই ছবিতে অতিরিক্ত নাটক, অযৌক্তিক সংলাপ এবং জোরপূর্বক প্রেমের গল্পের কারণে, আপনার মন স্ক্রিনে কম এবং আপনার মোবাইলে বেশি মনে হতে পারে। তবে যারা এই ধরণের ছবি পছন্দ করেন, তাদের ভাল লাগতে পারে। হাওয়ায় উড়তে থাকা জ্যাকেট পরে সলমনের সোয়াগ অনেকে মেনে নিলেও, পূজা হেগড়ের সঙ্গে ভাইজানের জুটি একেবারেই মানানসই নয় বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে সলমনের মুখে যে ভিএফএক্স করা হয়েছে, তাতে অনেক সময় পর্দায় স্পষ্ট দেখা যায় যে, কৌশলের সাহায্যে তার বয়স প্রায় ২০ বছর কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ছবিটির দ্বিতীয়ার্ধে গতি বাড়ে, তবে ক্লাইম্যাক্সের ২০ মিনিটে কিছুটা মজা রয়েছে। যারা মশলাদার ছবি পছন্দ করেন, ছবির শেষ কয়েক মিনিট তাদের ভাল লাগতে পারে।
এছাড়া ইদে মুক্তিপ্রাপ্ত সলমনের এই ছবি প্রযুক্তি এবং সঙ্গীতের অনেক দুর্বল, বা বলা ভাল প্রত্যাশা পূরণ করতে কিছুটা ব্যর্থ। অনেক সমালোচকদের মতে ছবির কাস্টিং অতটা ভাল না।
কেন দেখবেন?
দুর্দান্ত অ্যাকশনের জন্য ছবিটি দেখা যেতে পারে। এছাড়া পরিচ্ছন্ন পারিবারিক বিনোদন হিসাবেও ভাবা যেতে পারে। সলমন খানের ফ্যানেদের জন্য এটি খুশির খবর। সলমন অনুগামীরা অবশ্যই তাদের ভাইকে এমন একটি পাওয়ারপ্যাকড অ্যাকশন করতে দেখে শিস দেবে। সামগ্রিকভাবে ঈদ উপলক্ষ, পরিবারের সাথে যান এবং এই ছবিটি নিয়ে উৎসব উপভোগ করুন।