Pradip Sarkar Turned Vidya Balan To ASuperstar: ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী অভিনেত্রীর মধ্যে যদি লিস্ট করা হয় তাহলে বিদ্যা বালান (Vidya Valan)- উপরের দিকেই থাকবেন। বিদ্যা বালানের নাম ছাড়া এই লিস্ট পুরো হবে না। ভুলভুলাইয়া (Bhubhulaia), ইশকিয়া (Ishqia) থেকে নিয়ে শেরনি (Sherni) বা জলসা (Jalsa) কিংবা কাহানি (Kahani) অথবা পরিণীতা (Parineeta) একের পর এক দুরন্ত পারফরমেন্স দিয়ে তিনি বলিটাউনে নিজের শিকড় মজবুত করেছেন। কিন্তু এমন একটা সময় ছিল যখন তিনি নিজের প্রথম সিনেমার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন। একটা বাংলা একটা দক্ষিণী সিনেমা করে তিনি সবে সিলভার স্ক্রিনের স্বাদ পেয়েছেন। কিন্তু প্রশংসা বা ফেম কোনওটাই পাননি। সেই সময়ে তিনি পরিণীতার ডাইরেক্টর প্রদীপ সরকারের পরিচালনায় সিনেমা পরিণীতাতে একটি রোল পান। যা তাঁর জীবন বদলে দেয়। সইফ আলি খানের (Saif Ali Khan) বিপরীতে তাঁর অভিনয় গোটা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়। কিন্তু এই ফিল্মে তার অভিনয় করার কথাই ছিল না। মানে তিনি একাধিকবার অডিশন দিয়েও ফেল করেছিলেন। এবং সে সংখ্যাটা কম নয়, ৭৫ বার তাঁকে অডিশন নিয়ে তাকে রিজেক্ট করতে চলেছিলেন নির্মাতা। কিন্তু প্রদীপ সরকারের ছোট বদল তার জীবন ঘুরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনঃ হলিউড অ্যাক্টর রায়ান রেনল্ডস কি প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার বডিগার্ড? ভিডিও দেখে ধন্দে ফ্যানেরা
প্রদীপ সরকারে মৃত্যুতে তাজা পুরনো কাহিনী
প্রদীপ সরকার (Pradip Sarkar) এখন আমাদের মধ্যে আর নেই। ২৪ মার্চ ভোর ৩ টে ৩০-এ তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর নাম সিনেমার ট্যালেন্টেড পরিচালকদের মধ্যে গুনতি করা হয়। তিনি শুধু ডাইরেকশনই নন, এডিটিং এবং রাইটিং এর মাধ্যমে তার সিনেমা নিজের বহুমূল্য যোগদান দিয়েছেন। বিদ্যা বালানের পরিণীতাতে লিড রোল পাওয়ার গল্প এখন মিথে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়টি প্রমাণ করে যে চিত্র তারকাদের প্রিয় দাদা প্রদীপ সরকার ট্যালেন্ট চিনতে কতটা জহুরি ছিলেন।
লাগাতার রিজেক্ট হচ্ছিলেন বিদ্যা
৯০ দশকের পপুলার টিভি সিরিয়াল হামপাঁচে বিদ্যা বালানের একটি টিন এজারের রোল বেশ প্রশংসনীয় হয়েছিল। এবং এই রোলের পরেই পোস্ট গ্রেজুয়েশনের সময় তিনি মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টার মোহনলালের (Mohanlal) ফিল্ম চক্রম-এ সুযোগ পান।বড় অভিনেতার সঙ্গে লিড রোল পাওয়ার ফায়দা বিদ্যা বালানের জবরদস্ত হয়েছিল এবং তিনি পরপর ১২টি মালায়ালাম ফিল্মে সাইন করেন। কিন্তু এরপর চক্রমের কাজ আটকে যায়। মোহনলাল বড় স্টার ছিলেন এবং তাঁর ফিল্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ছিল। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রি লোকেরা বিদ্যাকে অপয়া তকমা দেয়। মোহনলালের সঙ্গে কাজ করার ফলে তার যে সিনেমাগুলি হাতে এসেছিল সবগুলি থেকেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই সমস্যা শুধু মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি পর্যন্ত সীমিত ছিল না বরং বালা এবং রানের মত তামিল ফিল্মেও তাকে একই সমস্যায় পড়তে হয়।
আরও পড়ুনঃ পোশাক না অন্তর্বাস! নোরা ফতেহির খোলামেলা শরীর দেখে Confused ভক্তকূল
বিদ্যা পরিণীতা এবং প্রদীপ সরকার
সিনেমায় কাজ পাওয়ার জন্য বিদ্যা লাগাতার স্ট্রাগল করছিলেন এবং এই সময়ে ফিল্ম মেকার বিধু বিনোদ চোপড়ার (Bidhu Binod Chopra) অফিসে তিনি পৌঁছন। সেই সময় পরিণীতার জন্য কাস্টিং হচ্ছিল। পরিণীতার মিউজিক কম্পোজার শান্তনু মৈত্র (Shantanu Maitra) মুম্বাই মিররের একটি ইন্টারভিউতে বলেন যে ভিডিও যখন বিদ্যা তার সঙ্গে দেখা করেন তখন এই ৭৫ বার অডিশনের রিজেক্ট হয়ে গিয়েছিলেন।শান্তনু জানান যে বিদ্যা যেদিন তার সঙ্গে দেখা করেন তারপরে ওই দিন সন্ধ্যায় বিখ্যাত গায়ক ব্রায়ান এডামসের (Brian Adams)কনসার্টে যাওয়ার প্ল্যান হচ্ছিল। কিন্তু প্রদীপ সরকারের ডাকে একটা শেষ অডিশনের জন্য তিনি এসেছিলেন। প্রদীপ সরকারকে বিধুবাবু বলেন যে ফিল্মের জন্য নতুন লোক ট্রাই করা হোক। কারণ আগের গুলি ভালো লাগছে না। বিদ্যা এতবার রিজেক্ট হয়েছিলেন যে তাঁর অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল যে তিনি অডিশন দেওয়ার পরে তাকে সিলেট করা হবে না। তিনি অডিশন দেন এবং গানের অনুষ্ঠানে চলে যান।
ললিতা পাওয়া গিয়েছে
দৈনিক ভাস্কর সঙ্গে একটি ইন্টারভিউতে প্রদীপ সরকার পরিণীতার কাস্টিং নিয়ে কথা বলেন, তখন তিনি জানান, বিদ্যা কে ওইদিন তিনি ১৩-১৪ বার টেস্ট নেন। ১৫ নম্বর বারের পর তিনি নিজের স্ত্রীকে বলেন, দেখো আমার ললিতা পেয়ে গেছেি।ওদিকে বিদ্যার রিজেক্ট হওয়ার বিষয়টি এতটা নিশ্চিত ছিলেন যে, প্রদীপ সরকার যখন তাঁকে কল করেন, তিনি ফোনই তোলেননি। বরং বদলে তিনি কনসার্টের মজা নিতে ডিস্টার্ব হচ্ছিল বলে ফোন সুইচ অফ করার কথা ভাবছিলেন। শান্তনু মৈত্র বলেন যে, কেউ বিদ্যাকে মেসেজ করেছিল যে, "তুমি পরিণীতা হয়ে গিয়েছো। এই স্ট্রাগল শেষ হয়ে গিয়েছে। মেসেজ পড়েই বিদ্যা কনসার্ট থেকে বাইরে আসেন এবং হাঁটু গেড়ে বসে কাঁদতে শুরু করেন।" এরপরের কাহিনী মিথ।
লাগা চুনরি মেদ দাগ
এরপর প্রদীপ সরকার লাগা চুনরি মে দাগ (Laga Chunri Me Daag) সিনেমার জন্য যখন বিদ্যাকে না নিয়ে রানী মুখার্জিকে (Rani Mukheree) কাস্ট করেন, তখন বিদ্যা খুব অভিমান করেছিলেন। তিনি অনেকদিন কথা বলতেন না। যদিও ৫ বছর পর একটি অ্যাড শুটের সময় শেষমেষ বরফ গলে।